মধুপুর থেকে আব্দুল্লাহ আবু এহসান: টাঙ্গাইলের মধুপুরসহ আশপাশের উপজেলা থেকে মধু রফতানি হচ্ছে ভারতে। ফলে মধুর বাজারজাত ও বিপণনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। ভারতীয় কোম্পানি ‘ডাবর’ এখন মধুর বড় ক্রেতা। এবার রফতানি ৬শ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে মধুপুর মৌচাষ উন্নয়ন সংস্থা।
টাঙ্গাইলের মধুপুর প্রাচীনকাল থেকেই মধুর জন্য বিখ্যাত। মধুপুর বনাঞ্চলে এক সময়ে প্রচুর মধু পাওয়া যেত। মধু হতে এলাকার নাম হয় মধুপুর বলে জনশ্রুতি রয়েছে। গত শতাব্দীর আশির দশকে মধুপুরে মৌবাক্সে মধু চাষ শুরু হয়। ‘এপি’ এটি প্রথম শুরু করে। পরে বিসিক ও গ্রামীণ ব্যাংক এখাতে ক্ষুদ্র ঋণ, প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়।
সরিষার ভরা মৌসুমে মধু আহরণে ব্যস্ত মৌচাষীরা
মৌচাষ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন মৌচাষ নিয়ে গবেষণা এবং তৃণমূল পর্যায়ে মৌচাষকে জনপ্রিয় করে তোলেন এবং মধুপুরে মৌচাষে বিপ্লব ঘটান। এলাকার বেকার যুবক-যুবতীকে মৌচাষের কলাকৌশল নিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। ফলে মৌচাষ মধুপুর উপজেলার সীমা ছাড়িয়ে পার্শ্ববর্তী ধনবাড়ী, গোপালপুর, ঘাটাইল, ভূয়াপুর, সখিপুর, সরিষাবাড়ী, মুক্তাগাছা, ভালুকা ও ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারত থেকে আনা হয় হাইব্রিড মেলিফেরা জাতের মৌমাছি। এতে উৎপাদন তিন গুণ বেড়ে যায়। বর্তমানে এসব উপজেলায় প্রায় ৬শ টন মধু উৎপাদন হয়। মধুপুর উপজেলার মোতালেব, রফিকুল ও জাহিদ, ভূয়াপুর উপজেলার আশরাফ ও ঝুমুর, গোপালপুর উপজেলার আরিফ, রিপন ও মনির এবং সখিপুর উপজেলার আফছার আলীর মত মৌচাষীরা মধু উৎপাদন ও বিক্রি করে এখন ভালো টাকা আয় করছেন।
এসব মৌচাষীরা এখন সরিষার ভরা মৌসুমে মধু আহরণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। মধুপুর মৌচাষ উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন জানান, ভারতীয় কোম্পানি ‘ডাবর’ এবার সারা দেশ থেকে ৮শ টন মধু কিনবে। এর সিংহভাগই টাঙ্গাইল ও এর আশপাশের এলাকা থেকে ক্রয় করা হবে। প্রতিমণ মধুর দাম ধরা হচ্ছে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।