শৈত্যপ্রবাহে ঈশ্বরদীর জনজীবন বিপর্যস্ত, তাপমাত্রা ৭.৩ ডিগ্রি

ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে স্বপন কুমার কুন্ডু: মাঝখানে বিরতি দিয়ে আবারও ঈশ্বরদীতে কামড় বসিয়েছে শীত। প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমছে। ঘন কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যের দেখা মিলছে দুপুরে। আবহাওয়া অফিস শনিবার ৯.৫ ডিগ্রি, রবিবার ৮.৬ ডিগ্রি এবং সোমবার (১২ জানুয়ারি) ৭.৩ ডিগ্রি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

দুপুর ১টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। আবারও শৈত্যপ্রবাহে ঈশ্বরদীর জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সর্বত্র নেমে এসেছে স্থবিরতা। শীতে কাঁপছে ঈশ্বরদীর অল্প আয়ের মানুষ। পিয়ারাখালী গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধা পাতানি বেগম জানালেন, ‘ক্যাতার তলায় শুইয়া থাহি, তবু ওম ধরে না, ওরে বাব্বা, শীতে হাড্ডিÑগুড্ডি ভাইংগা লয়”। তিনি বলেন, “খাইতে দেয় অনেকেই, শীতে মরি গেলেও কম্বল দিতি আসতিছে না কেউ”। পাতানি বেগমের স্বামী, সন্তান, ঘরবাড়ি কিছুই নেই। অন্যের আশ্রয়ে থাকেন। থাকা-খাওয়া একরকম চললেও শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষার কোনো উপায় নেই।

ishwardi (pabna)-12,1,15-1
রাতে ঈশ্বরদী স্টেশনে ভাসমান মানুষের দুর্দশার এমনচিত্র নিত্যদিনের

আবহাওয়ার পরিবর্তনে মানুষজন আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত রোগে। বয়স্ক ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের হাসপাতালে ভীড় করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে শিশুরা কোল্ড ডায়ারিয়া ও বয়স্করা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, বাড়তি শীত নিয়ে শঙ্কা কাটছে না কৃষকদের। শৈত্যপ্রবাহে বোরো বীজতলার কোল্ড ইনজুরি, আলুর তাড়াতড়ি বৃদ্ধিসহ ডাল ফসলের নানা শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

ঈশ্বরদী জংশন ষ্টেশনে ভাসমান মানুষের দুর্দশা অবর্ণনীয়। বিচালি বা খড় বিছিয়ে তার উপর শুয়ে পাটি জড়িয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে গরিব মানুষদের। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য।