মৌলভীবাজার থেকে আজিজুল ইসলাম : মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় নিখোঁজ হওয়ার ১৮ ঘন্টা পর শুক্রবার নবম শ্রেণির ছাত্র শেখ রায়হান আহমদের (১৪) লাশ পাওয়া গেছে ধানক্ষেতে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ দুই জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার দক্ষিণ খারপাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী সেলিউর রহমানের ছেলে রাজনগর আইডিয়েল হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শেখ রায়হান আহমদ (১৪) একই গ্রামের ছমদ মিয়ার বাড়ির কাজের ছেলে জাহেদের (২২) সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। রাত ১১টা পর্যন্ত বাড়িতে না আসায় খোঁজ পড়ে রায়হানের।
রাতে কোথাও না পেয়ে ভোরে এ ব্যাপারে রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে জাহেদকে জিজ্ঞাসা করলে সে অসংলগ্ন উত্তর দেয়। পরে তাকে আটক করে রাজনগর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের উতাইশাহ গ্রামের জিলা মিয়ার ছেলে প্রাইভেট কার চালক রুবেলের (২৩) কাছে হস্তান্তরের কথা স্বীকার করে। খবর দিয়ে রুবেলকে আনা হলেও সে বিষয়টি অস্বীকার করে। পরে তাদেরকে রাজনগর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
নিহত স্কুল ছাত্র শেখ রায়হানের মা আয়েশা বেগম রেখা জানান, তার ছেলে রায়হান সাধারণত সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে থাকে না। বৃহস্পতিবার গ্রামের মাজারে ওয়াজ মাহফিল থাকায় রাত ৮টায় বাড়ি ফেরে। এসময় তার সঙ্গে ছিল পাশের বাড়ির গৃহকর্মী জাহেদ। দু’জন একসাথে বাড়িতে খেয়ে বের হয়ে যায়। এরপর আর ফেরেনি।
এদিকে শুক্রবার বিকাল ৩টার সময় পাঁচগাঁও ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ রামদয়ালের ভাতিজা হাওর থেকে ঘাস নিয়ে আসার পথে ক্ষেতের জমিতে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে তার চাচাকে জানান। পরে বিষয়টি রাজনগর থানার পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, লাশের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অপরদিকে পুলিশ আটক জাহেদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একই উপজেলার বাগাজুড়া গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে নিহত রায়হানের বাইসাইকেল এবং জাহেদের গৃহকর্তার বাড়ির একটি ঘর থেকে মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আটক দু’জনসহ তিন জনের সংশ্লিষ্টতার কথা তারা জানতে পেরেছে।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক মোবাইল ফোন ও বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।