দিনাজপুর থেকে রতন সিং: দিনাজপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে বুধবার রাতে লন্ডভন্ড হয়েছে ৫টি উপজেলার অসংখ্য বাড়িঘর। ঝরে এক শিশু ও এক নারীসহ দুই জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ৩ জন। উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান, ভুট্টা ও আম-লিচুর।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টায় প্রচ-বেগে দিনাজপুর সদর, বিরল, চিরিরবন্দর, পার্বতীপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়। ঝড়ের সাথে প্রবল বর্ষণ হয়। কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টি হয়েছে। তীব্র ঝড়ে ৫টি উপজেলার কয়েক হাজার একর জমির ধান ও ভুট্টার ক্ষতি হয়। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আম ও লিচুর। লন্ডভন্ড হয়েছে ৫টি উপজেলার কয়েকশত বাড়িঘর। উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ১২ থেকে ১৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। জরুরিভিত্তিতে বিদ্যুতের লাইনে কাজ করার পর সংযোগ দেওয়া হয়। তবে অনেক জায়গায় এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। ঝড়ের স্থায়ীত্ব ছিল ২০ থেকে ২৫ মিনিট। ঝড়ের তীব্রতায় বিল বোর্ড, নিয়ন সাইন ও সাইনবোর্ড দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘরের টিন ছিটকে যায় কয়েক’শ গজ দুরে। ঝড়ের সময় মসজিদে মসজিদে মাইকে আজান দেওয়া হয়।
ঝড়ের রাতে চিরিরবন্দর উপজেলার জয়পুর গ্রামের মতিউর রহমানের আড়াই বছরের শিশু পুত্র আল সাইদী দেয়াল চাপায় ঘটনাস্থলে নিহত হয়। পার্বতীপুর উপজেলার সাহেদপাড়ার নাসিমের স্ত্রী নুরজাহান (৩২) ঝড়ের সময় আতঙ্কে মারা যান। একই উপজেলার কুলিপট্টির মোজাফ্ফরের মেয়ে ফারজানা (১০) ও আরিফ (২০) এবং রামরাইপুর ফরিদপাড়ার আব্দুল্লাহ (২২) গাছ চাপায় আহত হন। আহত ৩ জনকে পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল হান্নান জানান, ৫টি উপজেলায় ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। তবে ধান ও ভুট্টার বেশি ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করে তিনি বলেন, কিছু কিছু এলাকায় কিছু ধান-ভুট্টা গাছ হেলে পড়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপনে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা হাম্মাদুল বার বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কাজ চলছে।