মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): কলাপাড়ার পুরাতন হাসপাতাল ভবনের দোতলার সিঁড়ি রুমের ছাদ বুধবার সকালে ধসে পড়েছে। ঘটনার সময় ভবনের দোতলা ও নিচতলায় অন্তত দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিল। তবে ছাদ ধসের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
প্রায় ৬৪ বছর বয়সী ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লেও এটির ১০টি কক্ষে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঝুঁকি নিয়ে অফিস করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই দুটি অফিসের কর্মচারীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে বিকট শব্দে ছাদ ধসে পড়ে। এ সময় ভবনটি বালিতে ঢেকে যায়। সিঁড়ির ছাদ ধসে পড়ায় দোতলায় আটকে পড়া শতাধিক মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েন। প্রায় ১০ মিনিট পর ছাদের ভাঙা অংশ পড়ে গেলে আটকে পড়া মানুষেরা সিঁড়ি থেকে ছাদের অংশ সরিয়ে নিচে নেমে আসেন।
ঘটনার পরই উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভবনটি পরিদর্শন করেন। পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-সহকারী অংনয় জানান, তাদের অফিসে ৮৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মাঠকর্মী কর্মরত। এখন যে অবস্থা যেকোনো সময় গোটা ভবনটিই ভেঙে পড়তে পারে। তাই জরুরি ভিত্তিতে তাদের অফিস অন্যত্র স্থানান্তর করা না হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
১৯৫১-৫২ অর্থ বছরে হাসপাতালের জন্য দ্বিতল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে রাডারসংলগ্ন এলাকায় নতুন ভবনে হাসপাতাল স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে পুরাতন হাসপাতাল ভবনের ১০টি কক্ষের পাঁচটিতে পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও পাঁচটিতে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের টিসি মোহরার সত্যগোপাল চক্রবর্ত্তী জানান, ঘটনার সময় ভবনের দোতালায় ৩০জন নকলনবিশসহ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পরিবার পরিকল্পনা অফিসের অফিস সহায়ক সরোয়ার হোসেন জাকির জানান, প্রায়ই প্রতিদিনই ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। এতে একাধিক মাঠকর্মী আহত হয়েছেন। গত দু’দিন প্রবল বৃষ্টি হওয়ার কারণে ছাদের টেম্পার নষ্ট হয়ে ভেঙে পড়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা অফিস সূত্র জানায়, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক ২০০৮ সালের ৭ ডিসেম্বর কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে পরিবার পরিকল্পনা অফিস পরিচালনার জন্য রুম বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দেন। এই আদেশের কপিসহ রুম বরাদ্দের জন্য ২০১২ সালের ১৪ নভেম্বর ও এ বছরের ১৯ জানুয়ারি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। কিন্তু রুম বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
এদিকে হাসপাতাল ভবনের পূর্বদিকে ও পিছনের দেয়াল ঘেঁষে লোকজন টিনশেড ঘর তুলে দখল করে নিয়েছে। দখলদাররা দোকান ও গুদাম তুলে ভাড়া দেওয়ায় এখন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ভাড়াটিয়ারা। বর্তমানে ভবনের যে অবস্থা তাতে যেকোনও মুহূর্তে গোটা ভবনটি ধসে পড়তে পারে। এ কারণে ভবনের দুটি অফিসসহ ভবনের চারদিকের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার মো. শাহআলম হাওলাদার জানান, প্রায় সাত বছর আগে পুরাতন হাসপাতাল ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হলেও তারা অফিস রুম বরাদ্দ না পাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে অফিস করছেন।
কলাপাড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. লোকমান হাকিম জানান, হাসপাতালে ডাক্তারদের বসারই রুম নেই। তাই পরিবার পরিকল্পনা অফিসের জন্য তারা রুম কোথায় পাবেন। আর এ বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখেন।
কলাপাড়া পৌর মেয়র এসএম রাকিবুল আহসান বলেন, তিনি দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গেছেন। ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষণাসহ ভবনের চারপাশে দখল করা অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়া উচিত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ স্থাপনা উচ্ছেদে সহায়তা চাইলে পৌর কর্তৃপক্ষ আইনি সহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
সাংবাদিক বশির উদ্দিন বিশ্বাস রহিমউদ্দিন বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত

লালুয়া ইউনিয়নের রহিম উদ্দিন বিশ্বাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যনেজিং কমিটি গঠিত হয়েছে। কলাপাড়া প্রেসক্লাবের প্রবীণ সাংবাদিক মো. বশির উদ্দিন বিশ্বাস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মোসাম্মৎ পপি আক্তার। বুধবার বিদ্যালয় মিলনায়তনে সর্বস্মতিক্রমে এ কমিটি গঠিত হয়। বশির উদ্দিন বিশ্বাস ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কলাপাড়া প্রেসক্লাব ও রিপোটার্স ইউনিটির সাংবাদিকরা।