প্রতিনিধি, খুলনা: পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় পরোয়ানা জারির পর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু আজ সোমবার আদালতে আত্মসমর্পন করেছেন।
আদালত তার বিরুদ্ধে দুটি মামলার একটিতে জামিন মঞ্জুর করেন এবং অপরটিতে জামিন না-মঞ্জুর না করে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
সোমবার বেলা ১১টায় বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ বেষ্টিত হয়ে খুলনা কালেক্টরেট ভবনে অবস্থিত মেট্রোপলিটন আদালতে (১) আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
তার প্রধান আইনজীবী মঞ্জুর আহমেদসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী বিচারক মো. আমিরুল ইসলামের এজলাস কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। এসময়ে গণমাধ্যমের কর্মী, পুলিশ, দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের ব্যাপক উপস্তিতিতে আদালত চত্বরে উপচে পড়া ভিড় হয়।
ভীড় সামলাতে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে হিমশিম খেতে হয়। তবে দলীয় নেতা-কর্মীরা মান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখে।
শুনানিকালে খুলনা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক, সভাপতি এ্যাডভোকেট এস আর ফারুক, সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল আজিজসহ শতাধিক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময়ে আদালতের বাইরে বিপুল সংখ্যক নেতা মিছিল করতে থাকেন। মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে শুনানি শেষে তাকে প্রিজন ভ্যানে করে খুলনা কারাগারে নেওয়া হয়। তখন নেতা-কর্মীরা আবার ছুটে যান জেল গেটে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর নগরীর পাওয়ার হাউজ মোড়ে বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এসআই অনুকুল চন্দ্র ঘোষ বাদী হয়ে দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফুল আলম নগর বিএনপি সভাপতি সাবে এমপি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এবং সাধারণ সম্পাদক ও কেসিসির বরখাস্তকৃত মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনিসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
রোববার আদালত এ মামলায় নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর আগে নগরীর পিটিআই মোড়ে ইজি বাইক ভাঙচুর মামলায় গত ১৬ নভেম্বরও আদালত নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও মনিরুজ্জামান মনিসহ চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর মধ্যে পিটিআই মোড়ে ইজি বাইক ভাঙচুর মামলায় আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা জানান, দুটি মামলায় জামিনের জন্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে (১) আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু আদালতের বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম ইজি বাইক ভাঙচুর মামলায় জামিন দিলেও অন্য মামলায় জামিন না-মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর জামিন আবেদন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এসব মামলাকে বানোয়াট উল্লেখ করে অবিলম্বে মঞ্জুর মুক্তি দাবি করেছেন।