হাকিম বাবুল, শেরপুর: চিকিৎসায় আরোগ্য হওয়া যক্ষা রোগীদের মধ্যে শতকরা ২৮ ভাগ নতুন করে যক্ষায় আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে নিয়মমাফিক ও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চিকিৎসা না নেওয়ায় মাল্টি-ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (এমডিআর) যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এমডিআর যক্ষা আক্রান্তদের রোগ আরোগ্য হচ্ছে না।
যক্ষায় আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতিবছর লাখে ৪৫ জন মারা যায়। বছরে প্রতি লাখে ৪১১ জন যক্ষারোগে আক্রান্ত হয়। এদের মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয় ২২৫ জন। নতুন রোগীদের শতকরা এক দশমিক চার ভাগ মাল্টি-ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (এমডিআর)।
আজ বুধবার শেরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) আয়োজিত যক্ষা নিয়ন্ত্রণে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার মূলপ্রবন্ধে এমন তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, যক্ষা একটি ঘাতক ব্যাধি হলেও চিকিৎসায় যক্ষা সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়। দেশে বিনামুল্যে কফ পরীক্ষা ও যক্ষার চিকিৎসা হয়ে থাকে। দেশের সকল উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বক্ষ্যব্যাধি ক্লিনিক, সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিকে যক্ষা চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। এজন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা।
শহরের নিউমার্কেট আইডিইবি সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাটাব জেলা সমন্বয়কারী মো. কামরুজ্জামান। এতে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম মিয়া প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। নাটাব জেলা কমিটির সভাপতি মো. হারুনুর রশিদ দদুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে প্রেসক্লাব সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জ্বল, সাংবাদিক আব্দুল রহিম বাদল, সঞ্জিব চন্দ বিল্টু, নাটাব জেলা সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান মুরাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
শেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম মিয়া সভায় জানান, তিন সপ্তাহের বেশি কাশি যক্ষার প্রধান লক্ষণ। যক্ষারোগীর কফ, হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এর জীবাণু বাতাসে মিশে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সুস্থ্ ব্যক্তির ফুসফুসে প্রবেশ করে আক্রান্ত করতে পারে। এটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ হলেও নিয়মিত ও ছয় মাস মেয়াদের পূর্ণ চিকিৎসায় যক্ষা সম্পুর্ণ ভালো হয়। কিন্ত অনেক সময় সামাজিক কুসংস্কার, অজ্ঞতা, অবহেলা, অর্থনৈতিক সংকট ও সঠিক তথ্যের অভাবে যক্ষা রোগীরা চিকিৎসা নিলেও নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং পূর্ণ মেয়াদে চিকিৎসা গ্রহণ না করায় এমডিআর যক্ষা হয়ে থাকে। এসব এমডিআর রোগী যক্ষার জীবাণুর বাহক হিসেবে কাজ করে। শেরপুর জেলায় বর্তমানে ১২ জন এমডিআর যক্ষা রোগী রয়েছে। এসব এমডিআর রোগীদের স্বাস্থ্য বিভাগের তত্তাবধানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এজন্য তিনি জনগণকে যক্ষা রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা করেন।