নানা অনিয়মের মধ্যে কালীগঞ্জের ৯ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: শনিবার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ শেষ হয় কারচুপি, জাল ভোট প্রদান, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া ও পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে। ভোট গ্রহণ চলাকালে ভোটারদের হুমকী ও পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার প্রতিবাদে ভোট বর্জন করেন রাখালগাছী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন। তিনি শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরকারি দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জবর দখলের অভিযোগ এনে নির্বোচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সরকারি দলের ক্যাডাররা ভোট গ্রহণকে প্রভাবিত করছে। কালীগঞ্জের ত্রিলোচনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাদপুরসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দাদপুর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কালীগঞ্জ মহিলা কলেজের প্রভাষক মসিউর রহমানের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ভোটাররা সিল মারতে থাকে। এ সময় প্রার্থীদের কোন অভিযোগ তিনি শোনেন নি। সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সত্যতা পান। পরে স্ট্রাইকিং ফোর্স এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বারোবাজার ইউনিয়নের কেন্দ্রগুলোতে নীরব কারচুপি হয়েছে বলে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইন্তাদুল হক ইন্তা অভিযোগ করেন। নিয়ামতপুর ইউনিয়নের ফারাশপুর, মোস্তবাপুর ও অনুপমপুর ভোট কেন্দ্রে সরকারি দলের সমর্থকদের ভোটারদের প্রভাবিত করতে দেখা যায়। এদিকে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সাথে সাথে শনিবার বিকাল চারটার পর ২০ মিনিটের ব্যবধানে পর পর তিনটি বোমার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বালিয়াডাঙ্গা বাজার। এ সময় পাশেই উপস্থিত ছিল বিজিবির টহল দল। বোমার শব্দ শুনে বিজিবির টহল দল এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তবে নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্র্রেট সোহেল জুলকার নয়ন কবির দুইটি বোমা বিস্ফোরণের কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী শাহাজাহান আলী শেখ অভিযোগ করেন ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই তার মালিকানাধীন চাতালের পাশে তিনটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি আরো জানান, ভোটের ৩ দিন আগ থেকে তার প্রতিপক্ষ ভাড়া করা সন্ত্রাসী এনে বেপরোয়াভাবে বালিয়াডাঙ্গা ও গোটা গ্রামে বোমা হামলা চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এতে বিএনপি ও তার সমর্থকরা ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, কে বা কারা বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন রাকিব জানান, ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বড় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া কোন প্রার্থী ভোটে অনিয়মের কোনো অভিযোগ করেনন নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.