রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): র্যাবের গুলিতে পঙ্গু ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামের লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমের (৪৫) ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে প্রতিবেশী ইব্রাহিম হাওলাদার ও তার সহযোগীরা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় একটি মেহগনি গাছ কাটা নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, লিমনের বাবা তোফাজ্জেল হোসেন ও মা হেনোয়ারা বেগম কাউখালীর বাসা থেকে রাজাপুরের সাতুরিয়া গ্রামের বাড়িতে যান। দুপুরে লিমনের মা কুড়াল দিয়ে ঘরের পাশের একটি মেহেগনি গাছ কাটার সময় প্রতিবেশী ইব্রাহিম হাওলাদার ও তার চাচাতো ভাই মোস্তফা হাওলাদার লোকজন নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। লিমনের মায়ের হাত থেকে কুড়াল ছিনিয়ে নিয়ে তাঁকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, র্যাব লিমনকে গুলি করার পর তার একটি পা পঙ্গু হয়ে যায়। এরপর আমরা র্যাবের স্থানীয় সোর্সদের ভয়ে কাউখালী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি ভাড়া করা বাসায় বসবাস করতে থাকি। ২০১২ সালের ২০ আগস্ট ঈদের দিন লিমন আমাদের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে গেলে র্যাবের সোর্স ইব্রাহিম হাওলাদার ও তার সহযোগীরা তাকে মারধর করে। ইব্রাহিম থাপ্পড় দিয়ে লিমনের একটি কান ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ঘটনায় রাজাপুর থানায় মামলা দায়ের হলে ইব্রাহিমকে দোষী সাব্যস্ত করে ঝালকাঠির আদালত এক হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইব্রাহিম এলাকায় লিমনকে ও তার পরিবারকে আসতে নিষেধ করেন। মঙ্গলবার দুপুরে গ্রামের বাড়িতে আসলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে ইব্রাহিম হাওলাদার বলেন, লিমনদের সঙ্গে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে আমার জমিতে আমারই লাগানো গাছ কাটার সময় লিমনের মায়ের হাত থেকে কুড়াল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে একটু ঝগড়া হয়েছে। কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, লিমনের মাকে মারধরের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের জন্য বলা হয়েছে। এখনো অভিযোগ দেননি তাঁরা। ঘটনা সত্য না মিথ্যা- তা জানি না, তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষ পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বাড়ির কাছে মাঠে গরু আনতে গিয়ে র্যাবের গুলিতে পঙ্গু হন কাউখালী উপজেলার কাঠালিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র লিমন হোসেন।