প্রতিনিধি, বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার আস্তাইল এলাকায় সদ্য শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা, মামলা, দোকান-বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট অব্যাহত রয়েছে।
গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫টি বসতঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর হয়েছে। পাল্টাপাল্টি মামলায় অধিকাংশ পরিবারের পুরুষরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নারী ও শিশুরা আতঙ্কে রয়েছেন। খান ও চৌধুরী বংশের এ বিরোধে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, গত ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে উপজেলার সিংগাতি গ্রামের জানিক চৌধুরীকে মেম্বার পদে ভোট না দেওয়ায় মজনু মোল্লাকে মারপিট করলে গুরুতর আহত হন তিনি। এখবর পাশের আস্তাইল গ্রামের খান বাড়িতে ছড়িয়ে পড়লে খান ও চৌধুরী বংশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খান বাড়ি মজনু মোল্লার মামার বাড়ি।
পহেলা জুন বেলা ১১টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশত আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হলেও হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা থামেনি।
মঙ্গলবার রাতে আস্তাইল গ্রামের সালেক খান, এনামুল খান, হাসু খান, আকরাম ও ইনজিলের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। চৌধুরী বংশের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি বেপরোয়া আচরণ করছেন বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান।

আস্তাইল গ্রামের হাসিনা বেগম বলেন, রাতে ২৫-৩০ জনের একদল লোক এসে প্রথমে বসতঘরে ইট ছুড়ে মারে। পরে ঘরের বেড়া ও দরজা ভাঙচুর করে তারা। হাসিনার স্বামী ঢাকায় দিনমজুরের কাছ করে।
প্রতিবেশী দোকানদার সিদ্দিক বলেন, চায়ের দোকান দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাতাম। মারামারিকে কেন্দ্র করে দোকানঘর ও বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকি উল্টো মামলা দিয়ে প্রায় ৪০টি পরিবারকে গ্রাম ছাড়া করেছে প্রতিপক্ষ।
এ ব্যাপারে জানিক চৌধুরীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার এক ঘনিষ্টজন বলেন, হামলায় জানিক চৌধুরীর ২০-২৫ লোক আহত হয়।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ স ম খায়রুল আনাম বলেন, আস্তাইলের খান ও পাশের সিংগাতি গ্রামের চৌধুরী পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিরা পলাতক। তবে নতুন করে কোনো বাড়িঘরে হামলা হয়নি।