রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জের ধরে পিরোজপুরের কাউখালীতে নাসিমা বেগম (৩৫) নামে এক নারীর ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা।
এক সদস্য প্রার্থীর সমর্থকরা নাসিমার গলায় গামছা প্যাঁচিয়ে টেনেহিঁচড়ে আর লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাকে আহত করে।
নাসিমার জা ডলি বেগম (৩৭) ও ডলির কলেজ পড়ুয়া ছেলে মেহেদী হাসানকেও পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা।
আহতদের কাউখালী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নাসিমার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের দক্ষিণ জোলাগাতি গ্রামের মেম্বার প্রার্থী সেলিম বিশ্বাস আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের নিয়ে এ সন্ত্রাসী হামলা চালায় বলে নাসিমা অভিযোগ করেন।
হাসপাতাল ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ জোলাগাতি গ্রামের মামুন হাওলাদার ও তার পরিবারের স্বজনরা গত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাইকেল প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে পরাজিত মেম্বার প্রার্থী সেলিম বিশ্বাসের নেতৃত্বে আনারস প্রতীকের সমর্থক ১০/১২ জনের একটি দল প্রতিপক্ষ মামুন হাওলাদারের ছেলে কলেজ ছাত্র মেহেদী হাসানের ওপর হামলা চালায়। এসময় মেহেদী দৌড়ে বাড়িতে আসলে সন্ত্রাসীরা তাকে উঠানে ফেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় মেহেদীর চাচি নাসিমা বেগম ও মা ডলি বেগম এবং মিনারা বেগম মেহেদীকে উদ্ধারে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা ওই তিন নারীকে পিটিয়ে আহত করে। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে আহতদের কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ হামলায় অভিযুক্ত জোলাগাতি গ্রামের পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী সেলিম বিশ্বাসসহ অভিযুক্তরা ঘটনার পর থেকে পলাতক।
নাসিমা বেগমের দেবর ইউপি সদস্য মো. মামুন হাওলাদার বাদী হয়ে ১৭ জনের বিরুদ্ধে কাউখালী থানায় আজ শুক্রবার একটি মামলা দায়ের করেছেন।
তিনি দাবি করেন, নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় পরাজিত মেম্বার প্রার্থী সেলিম বিশ্বাস ও আনারস প্রতীকের সমর্থকরা তার পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে
শিয়ালকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন সিকদার হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আহত পরিবারের লোকজন গত ইউপি নির্বাচনে সাইকেল প্রতীককে সমর্থন দেওয়ায় আনারস প্রতিকের সন্ত্রাসী সমর্থকরা এ হামলা চালিয়েছে। তিনি আরও বলেন, নাসিমা বেগমের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।
তবে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, হামলার ঘটনায় আমার সমার্থকরা জড়িত নয়। মারামারি হয়েছে মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার বলেন, নাসিমা ও তার পরিবারের ওপর প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা ববর্র হামলা চালিয়েছে। অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে ।