অর্থ আত্মসাতের শতাধিক অভিযোগে মোংলার কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

জাহিবা হোসাইন, মোংলা (বাগেরহাট): অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মোংলা পোর্ট পৌরসভার কর নির্ধারক মো. মহাসীন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গ্রাহকদের কাছ থেকে পৌর কর আদায় করে তা তহবিলে জমা না দেওয়া এবং পৌরসভার হোল্ডিং মালিকানা নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে পৌরবিধি না মেনে অর্থ আত্মসাৎ করার শতাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মেয়র মো. জুলফিকার আলী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।

মেয়র স্বাক্ষরিত বরখাস্তের এ আদেশ রবিবার থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

ইতিমধ্যে বরখাস্ত মহাসীনকে তার কাছে রক্ষিত সব ফাইল, রেজিস্টার, কাগজপত্র ও মালামাল সহকারী কর আদায়কারী মো. জলিল তালুকদারের কাছে ঝুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাকে কর্মস্থল ত্যাগ না করার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতি কর্মদিবসে কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সম্মুখে তাকে উপস্থিত হয়ে হাজিরা দিতেও বলা হয়েছে তাকে।

কর নির্ধারক মো. মহাসীন হাওলাদার ওরফে রনির অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আলাউদ্দিনকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন কোষাধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন বাহাদুর ও সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম। কমিটি আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে মেয়রের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

পৌরসভার সূত্র জানায়, মহাসীন হাওলাদার পৌরসভার বিধিবিধান না মেনে শহরের মাদ্রাসা রোডের বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র বিশ্বাসের মালিকানাধীন হোল্ডিং নং ০১৪৬ পরিবর্তন করে নুরুল ইসলাম ও জালাল আহমেদের নামে করিয়ে দেন । পৌর নিয়ম অনুযায়ী হোল্ডিং মালিকানা পরিবর্তনে মালিকের মূল দলিল মূল্যের শতকরা এক ভাগ পৌর তহবিলে জমা দিয়েই হোল্ডিং নাম পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু নারায়ণচন্দ্রের হোল্ডিং মালিকানার নাম পরিবর্তন করে নুরুল ইসলাম ও জালাল আহমেদের নামে করিয়ে দিয়ে দলিল মূল্যেরএক ভাগ প্রায় ৫০ হাজার টাকা পৌর তহবিলে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া খলিল আহমেদের কাছ থেকে ৩ হাজার ৭০০ টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স (হোল্ডিং নং ০০২৪) আদায় করে তা পৌর তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন মহাসীন। এছাড়া তিনি গ্রাহকদের কাছ থেকে করের টাকা নিয়ে তাদেরকে পৌর কর্তৃপক্ষের বিল পরিশোধ সম্বলিত সিল স্বাক্ষরযুক্ত কপি দিয়ে আসেন। আর আদায়কৃত সেই টাকা পৌর তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন তিনি। বহুল আলোচিত এই কর নির্ধারক মেছেরশাহ সড়কের হোল্ডিং মালিক মো. জাকারিয়ার কাছ থেকে হোল্ডিং মালিকানা নাম পরিবর্তন করে দেওয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা নগদ আদায় করে নিজেই আত্মসাৎ করেন।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র মো. জুলফিকার আলী বলেন, হোল্ডিং মালিকদের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের শতাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে পৌর কর নির্ধারক মহাসীন হাওলাদারের বিরুদ্ধে। সে সকল অভিযোগের মধ্যে অনেকগুলোরই সত্যতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের জন্যই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.