রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর ২৬ জুলাই

স্বপন কুমার কুন্ডু, ঈশ্বরদী (পাবনা): রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ঋণচুক্তি ২৬ জুলাই স্বাক্ষরিত হবে। কেন্দ্র নির্মাণের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ১ লাখ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি করবে।

ishwardi-19,7,16-3 (1)
নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়া যাচ্ছেন। অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ হান্নান, ইআরডি’র সচিব মেজবাহ উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়জুল্লাহ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আনোয়ার হোসেন।

প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, গত মাসের ২১ জুন বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনকে কেন্দ্র স্থাপনে সাইট লাইসেন্স প্রদান করে। এরপর ২৭ জুন মন্ত্রিসভা কমিটিতে এই ঋণচুক্তির খসড়া অনুমোদিত হয়। ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর হবে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ব্যয়ের ১০ ভাগ নিজস্ব অর্থায়নে এবং অবশিষ্ট ১১.৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দিবে রাশিয়া। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ঋণের টাকা প্রদানের ১০ বছর পর হতে ৩০ বছরের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ২০২৭ সালের ১৫ মার্চ হতে ঋণের প্রথম কিস্তি প্রদান শুরু হবে। প্রতি বছরের ১৫ মার্চ ও ১৫ সেপ্টেম্বর সমপরিমাণ কিস্তিতে সরকারকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সুদের হার ৪ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।

এর আগে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া সফরে গেলে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি হয়। প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর আরো জানান, এই প্রকল্প দুই ভাগে নির্মিত হচ্ছে। প্রথমত প্রস্তুতিমূলক এবং দ্বিতীয়ত মূল নির্মাণ কাজ। প্রস্তুতিমূলক কাজের ব্যয় ৫৫০ মিলিয়ন ডলার। প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য চারটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ১ম ও ২য় চুক্তির কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। ৩য় ও ৪র্থ চুক্তির কাজ চলমান। ২০১৬ সালের মধ্যেই প্রস্তুতিমূলক সকল কাজ শেষ হবে। জুলাইয়ের মধ্যে কন্সট্রাকশন লাইসেন্স পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।

২০১৭ সালেই প্রকল্পের মূল নির্মাণ অর্থাৎ পরমাণু চুল্লি তৈরির কাজ শুরুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার ক্লাবে প্রবেশ করবে বলে তিনি আশা পোষণ করেন। ২০২৩ সালে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার কথা থাকলেও এই সময়ের আগেই অর্থাৎ ২০২১ সালের মধ্যেই প্রথম ইউনিট চালু করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.