কাউখালীতে জমে উঠেছে আমন চারা বিক্রির ভাসমান বাজার

রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী (পিরোজপুর): দেশের উপকূল অঞ্চলে চলছে আমন আবাদের মৌসুম। চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে টানা বৃষ্টিপাত, বৈরী আবহাওয়া ও মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে উপকূলের অনেক এলাকায় আমনের চারা নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যতিক্রম কাউখালী। ফলে পিরোজপুরের কাউখালীতে এখন জমজমাট আমন চারা বিক্রির ভাসমান বাজার।

kawkhali-bij-7-2
কাউখালীতে জমে উঠেছে আমন চারা বিক্রির ভাসমান বাজার। বিভিন্ন এলাকার চাষিরা চারা কিনেতে আসছে এই বাজারে।

কাউখালী শহরের দক্ষিণ বন্দর এলাকার চিরাপাড়া সেতুর কাছে সন্ধ্যা নদীর পাড়ে সপ্তাহের শুক্রবার ও সোমবার বসছে আমন চারার হাট। সারা উপকূল জুড়ে আমন চারা পেতে বিপন্ন কৃষক ছুটছেন কাউখালীর ওই ভাসমান চারার হাটে।

সোমবার আমন ধানের চারা বিক্রির এ হাটে কয়েক লাখ টাকার আমন চারা বিক্রি হয়েছে বলে বীজ ব্যবসায়ী ও বীজ ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।
কাউখালী অঞ্চল অন্যান্য এলাকার তুলনায় জমি উঁচু বলে এখানে জলাবদ্ধতা তেমন নেই ফলে বীজতলা নষ্ট হয়নি। এ কারণে অন্যান্য এলাকার কৃষকরা আমন চারার সংকট কাটাতে কাউখালীর এ ভাসমান বীজের হাটে আসছেন।

পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি ও বাগেহাটের কৃষক ও বীজ ব্যবসায়ীরা এ হাটে চারা কিনতে আসছেন। পরিবহনে সুবিধার কারনে নৌকা ও ট্রলারে করে ব্যবসায়ীরা ও কৃষকরা এখানে বীজের হাটে আসেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কাউখালী অঞ্চলের মাঠ অন্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক উঁচু। ফলে জলাবদ্ধতাও কম। একার কৃষকরা বীজতলা করে সফলতার মুখ দেখছেন। এখানে যুগ যুগ ধরে ধান বীজ বিক্রির বাণিজ্যিক বাজার গড়ে উঠছে। এখানে উৎপাদিত ধানের চারা অত্যন্ত ভাল মানের। তাই বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা এ হাট হতে চারা সংগ্রহ করছেন। চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার পরও এখানে ভাল ধানের চারা উৎপন্ন হয়েছে। এ কারণে এখানের ভাসমান আমন চারার হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের সমাগম ঘটেছে।

রাজাপুরের এলাকার বীজ ব্যবসায়ী কবীর জানান, সোমবারের ভাসমান বীজের হাটে ৮০ গ-া (মঠি) মানে একপণ আমন চারা ১৫’শ থেকে ১৭’শত টাকা করে বিক্রি হয়েছে। এ বীজ আবার অন্য অঞ্চলে আরো বেশি দামে বিক্রি করা হবে। এখানের ভালোমানের ধানের চারা পাওয়া যায় বলে এ হাট হতে তিনি বীজ ক্রয় করছেন।

ঝালকাঠীর রাজাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল গফ্ফার বলেন, গত মৌসুমে ৮০ গ-া ধান চারা সর্বোচচ ৭০০ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল। এবার আমাদের এলাকায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় সংকট দেখা দেয়। এতে বীজের মূল্য চড়া। গতবারের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশিমূল্যে এবার ধান চারা বিক্রি হচ্ছে।
কাউখালী উপজেলা কৃিষ কর্মকর্তা আলী আজিম শরীফ বলেন, এবার উপকূলীয় অঞ্চলে আমন চারার সংকট চলছে। তবে কাউখালীতে এ সংকট নেই । এখানে এবার ভাল বীজ উৎপাদন করেছেন কৃষক। তাছাড়া এখানে বাণিজ্যিকভাবেই কৃষক আমন চারা উৎপাদন করছেন। ফলে কাউখালীতে গড়ে উঠেছে আমন ধান চারার ভাসমান বাজার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.