হাকিম বাবুল, শেরপুর: বিয়ে করে বউ নিয়ে বাড়ি যাওয়ার বদলে বরকে যেতে হলো শ্রীঘরে। বাল্যবিয়ের অপরাধে শেরপুরে কফিল উদ্দিন (২৩) নামে এক যুবককে বিয়ের আসর থেকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালত দুই সপ্তাহের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ায় তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একই অপরাধে বরের বাবা মোকছেদ আলীকে এক হাজার টাকা, কনের বাবা আজিজ মিয়াকে এক হাজার টাকা এবং কনের মা হাসনা বানুকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। শেরপুর শহরের মোবারকপুর কইন্যাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। শেরপুর কালেক্টরেটের সহকারি কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম দেবাংশু কুমার সিংহ শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টায় এ দণ্ড প্রদান করেন। পরে আদালতের নির্দেশে রাত ৯ টার দিকে সাজাপ্রাপ্ত কফিল মিয়াকে শেরপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সাজাপ্রাপ্ত অন্যরা জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে খালাস পান। একইসাথে তারা ভবিষ্যতে মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা দেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শহরের মোবারকপুর কইন্যাপাড়া গ্রামের আজিজ মিয়ার ১৬ বছরের মেয়ের সাথে একই গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে কফিল মিয়ার বিয়ে ঠিক করা হয়। কনে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অপরদিকে, বর কফিল মিয়া একজন কৃষি শ্রমিক। শুক্রবার রাতে তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল এবং সে অনুযায়ী কনের বাড়িতে সব আয়োজন করা ছিল। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালেক্টরেটের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী হাকিম দেবাংশু কুমার সিংহ রাত ৮ টার দিকে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে বাল্যবিয়েটি বন্ধ করে দেন। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে বরসহ চার জনকে অভিযুক্ত করে বরকে কারাদণ্ড ও অন্যদের অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। শেরপুর সদর থানা পুলিশ ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগিতা করেন।
শেরপুর কালেক্টরেটের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী হাকিম দেবাংশু কুমার সিংহ বাল্যবিয়ে বন্ধ এবং এর সাথে জড়িত বর ও বর-কনের পিতা-মাতাকে সাজা দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।