কুয়াকাটায় ট্রলারসহ ১৪ ডাকাত আটক, অপহৃত ৪ জেলে উদ্ধার

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় নৌ বাহিনীর টহলরত জাহাজ বিএনএস শহীদ মহিবুল্লার সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে এফবি নার্গিস নামের একটি মাছধরা ট্রলারসহ ১৪ জন ডাকাত আটক করেছে। এ সময় তারা ট্রলারে জিম্মি করে রাখা চার জেলেকে উদ্ধার এবং ওই ট্রলারে থাকা প্রায় ১০ মন বিভিন্ন আকারের ইলিশ জব্দ করে। আটককৃত ১৪ ডাকাতকে মঙ্গলবার দুপুরে মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Kalapara robbary
কুয়াকাটায় নৌ বাহিনীর সদস্যরা বঙ্গোপসাগর থেকে মাছধরা ট্রলারসহ ১৪ জন ডাকাত আটক করে।

আটক ডাকাতরা হলো জসিম উদ্দিন (২৮), আবু আহমেদ (৩৮), মানিক (৪৯), ইউসুফ (২০), মোরর্শেদ (২৮), আনসার হোসেন (২২), ইয়াহিয়া (৩০), আনিস (২৫), আমদাজ (২২), মিজানুর রহমান (২৮), খালেদ হোসেন (১৯), এনায়েত আলী (২২), নেছারুল করিম (২২) ও কাওসার (২২)। এদের সকলের বাড়ি কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও চকোরিয়ায়।

সোমবার শেষ বিকেলে কুয়াকাটা থেকে আনুমানিক ২৫/৩০ মাইল পশ্চিমে গভীর সাগরে অভিযান চালিয়ে নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে। নৌ বাহিনীর সাব-লেফটেনেন্ট মারুফ এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন।

চট্টগামের সিদ্দিক কোম্পানির এফবি নার্গিস ট্রলারের মিস্ত্রী আয়ূব আলী জানান, রোববার রাত ২টার দিকে সাগরে মাছধরারত অবস্থায় ডাকাত দল অপর একটি ট্রলারে করে এসে ৩টি কাটা বন্দুক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের  ট্রলারে উঠে পড়ে এবং বন্দুকের ভয় দেখিয়ে তাদের জিম্মি করে ফেলে। তখন ওই ট্রলারে ১৮ জন জেলে ছিল। এরপর ডাকাতরা ওই ট্রলার থেকে পাথরঘাটার একটি মাছধরা ট্রলারে ১৪ জেলেকে তুলে দেয়।

ট্রলারের মাঝি কালাম, দ্বিতীয় মাঝি করিম, মিস্ত্রী আয়ূব আলী ও বাবুর্চি সফিউল কাদেরকে ট্রালারে রেখে ডাকাত দল তাদেরকে নির্দেশন অনুযায়ী ট্রলার চালাতে বলে। আয়ূব আলী জানান, এ সময় ডাকাতরা কমপক্ষে ৮টি ট্রলারে ডাকাতি করে এবং ডাকাতির মালামাল তাদের সাথে থাকা আপর একটি ট্রলারে করে পাঠিয়ে দেয়। সোমবার শেষ বিকেলে নৌ বাহিনীর জাহাজ ডাকাতদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা তাদের সাথে থাকা ৩টি কাটা বন্দুক, দা ও ছ্যানা সাগরে ফেলে দেয়। এরপর নৌ বাহিনীর সদস্যরা ১৪ ডাকাতকে আটক করে এবং আমাদের ট্রলারের মাঝিসহ চার জনকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার দুপুরে ১৪ ডাকাতকে নিয়ে ট্রলারটি মৎস্য বন্দর মহিপুরে আসলে জেলেসহ হাজার হাজার মানুষ ডাকাতদের দেখতে ভিড় জমায়। কলাপাড়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলামের উপস্থিতিতে ডাকাতদের মহিপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই মনিরুজ্জামান জানান, আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.