জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলা ৫ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয়, তার আগের দিন রাতে ৪ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তি বাহনীর তুমুল যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধের নায়ক মাহাতাব উদ্দিন এখন এখন চা-বিক্রেতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মহেশপুর থানায় একাধিক সম্মুখযুদ্ধের সাহসী যোদ্ধা মাহাতাব উদ্দিনের পিতা মৃত পাচু মন্ডল এবং মাতা-শহর বানু।
সেই সময় যুবক মাহাতাব উদ্দিনের বয়স ছিল ৩৫/৩৬ বছর। তিনি মহেশপুর পুরাতন সোনালী ব্যাংকের মধ্যে ছোট একটি দোকান দিয়ে এখন চা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর আগে ভ্যান চালিয়েছেন কয়েক বছর। মহেশপুরে ৭/৮টি সম্মুখযুদ্ধ হয়। সবকটি যুদ্ধে মাহাতাব উদ্দিন অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
২০ নভেম্বর ১৯৭১ সালে দত্তনগরে যুদ্ধ চলাকালীন তাঁর স্ত্রী জাহানারা বেগম সন্তান প্রসবকালীন মারা যান। তুমুল যুদ্ধ চলায় সেদিন মাহাতাব উদ্দিন স্ত্রীকে শেষ বারের মতো দেখতে আসতে পারেননি। কারণ যেভাবেই হোক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করতে হবে এটাই ছিল তার মূল লক্ষ্য। তাঁর সেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছিল কিন্তু স্ত্রীর সাথে শেষ দেখা হয়নি। বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব উদ্দিন দুঃখের সাথে এসব কথা বলেন। দত্তনগর এলাকায় একাধারে কয়েক দিন যুদ্ধ চলেছিল। এ সময় তাঁর হাতে গুলি লেগেছিল এবং পায়ে সেলের স্পিøন্টার লেগে তিনি আহত হন।
বর্তমানে অভাবে চলে তাঁর সংসার। ভাঙা ঘরে একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। সরকারের দেওয়া ভাতা ছাড়া তারা আর কিছুই পান না। তাঁর ৪ ছেলে ১ মেয়ে। চা বিক্রি করে বর্তমান যুগে এত বড় সংসার চালানো খুবই কষ্টকর।
মাহতাব উদ্দিন বলেন, সেই সময় শান্তি বাহিনী ও রাজাকার বাহিনীর অনেকেই আজ বীরদর্পে ঘোরাফেরা করে, এটাই তাঁর কাছে কষ্টদায়ক। তিনি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, কিন্তু তার কথা এখন কেউ স্বরণ করে না।