শেরপুর থেকে হাকিম বাবুল: ইসলামি সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ায় প্রতিবাদী মুসল্লিরা মঞ্চে জুতা ছোড়া শুরু করলে মঞ্চ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন হেফাজতে ইসলামের এক নেতা।
শেরপুর শহরের নবীনগর ফারুকিয়া দারুচ্ছালাম মাদ্রাসা ময়দানে পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে গতকাল (৩ জানুয়ারি) আয়োজিত ইসলামি মহাসম্মেলনে মাওলানা মো. কামাল উদ্দিন দায়েমীর বক্তব্য দেবার সময় এ ঘটনা ঘটে।
নারায়ণগঞ্জের মাওলানা দায়েমী ওই সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন। তিনি হেফাজতে ইসলামের অন্যতম নায়েবে আমির।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মুসুল্লিদের কাছ থেকে জানা যায়, রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মাওলানা মো. কামাল উদ্দিন দায়েমী বক্তৃতা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি লতিফ সিদ্দিকী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ইত্যাদি প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তীব্র সমালোচনা শুরু করেন।
তিনি উল্লেখ করেন- সংসদ সদস্যপদ বাতিল করে লতিফ সিদ্দিকীকে অবিলম্বে ফাঁসি দেওয়া না হলে আল্লামা শফির নেতৃত্বে আলেম-উলামারা রাজপথ দখলে নেবে।
মাওলানা দায়েমীর বক্তব্যে উপস্থিত মুসুল্লিদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হলে আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব দুলাল মিয়া মঞ্চে ওঠে মাইক নিয়ে মুসল্লিদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
কিন্তু উত্তেজিত মুসুল্লিরা মঞ্চে অবিরাম জুতা ছোড়া শুরু করেন। পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে মাওলানা দায়েমী মঞ্চ ছেড়ে চলে যান। এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ও স্বেচ্ছাসেবকদের চেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসলেও বেশিরভাগ মুসল্লি সম্মেলনস্থল ছেড়ে চলে যান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে।
নবীনগর ফারুকিয়া দারুচ্ছালাম মাদ্রাসার সভাপতি ওসমান গণি সুরুজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সভায় প্রধান বক্তা কামাল উদ্দিন দায়েমী রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে শুরু করলে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আমাদের মাদ্রাসায় সভায় রাজনৈতিক বক্তব্য না দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা রয়েছে। ওই বক্তা সম্পর্কে আমাদের পরিচালনা কমিটির কোনও ধারণা ছিল না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাদ্রাসা কমিটির জরুরি সভা ডাকা হযেছে।
এর আগে সন্ধ্যায় শায়খুল হাদিস মাওলানা এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে এ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে আমন্ত্রিত বক্তাদের বক্তব্য মুসুল্লিরা আগ্রহের সঙ্গে শোনেন।