নোয়াখালীতে ব্যাপক সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে নিহত ২, বৃহস্পতিবার হরতাল

জামাল হোসেন বিষাদ, নোয়াখালী: নোয়াখালীর চৌমুহনীতে পুলিশ ও ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে দুজন মারা গেছে। এ ঘটনায় আরো চারজন গুলিতে আহত হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার নোয়াখালীতে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।

সংঘর্ষে নিহতরা হলে মিজানুর রহমান রুবেল (৩০) ও মইন উদ্দিন মহসিন (২৮)। পুলিশের উপ-পরিদর্শক সাইফুল সিকদার, দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০জন এ সময় আহত হয়। গুলিবিদ্ধ চারজনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মিজানুর রহমান রুবেল সেনবাগ উপজেলার শীবপুর গ্রামের তোফায়েল আহমদের ছেলে। চৌমুহনীতে তার মনোহরি সামগ্রীর দোকান রয়েছে। মহসিন বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর গ্রামের খোরশেদ বাবুর্চির ছেলে।  তারা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কি-না প্রাথমিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

গুলিবিদ্ধদের মধ্যে রয়েছেন বেগমগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩৫), একই গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে মাকসুদুর রহমান, গণিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সাহাব উদ্দিন (২৬), সোনালী ব্যাংক চৌমুহনী শাখার আনসার সদস্য ঝিনাইদহ জেলার আমজাদ মোল্লার ছেলে কামাল হোসেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,  বুধবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে ২০ দলীয় জোটের কর্মীরা নোয়াখালীর প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনীতে পূর্বনির্ধারিত মিছিল করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। উভয় পক্ষের মধ্যে এসময় কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অবরোধকারীরা পুলিশকে আক্রমণ করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ শুরু করলে অবরোধকারীদের আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা ব্যাপক ভাংচুরে জড়িয়ে পড়ে।

অবরোধকারীরা পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। দোকান ও অটোরিকশা ভাংচুর করে। ভাংচুরের এক পর্যায়ে পুলিশ এ্যাকশনে যায়। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায়। গুলিতে মিজানুর রহমান রুবেল, মইনসহ ২০ জন গুলিবিদ্ধ হয়। রুবেল, মইনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তাররা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে বিজিবি এসে পৌছে। এলাকার  পরিস্থিতি থমথমে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেছে।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি আইনুল হক জানান, পুলিশ কত রাউন্ড গুলি করেছে তার হিসাব এখনো করা হয়নি।