রাজশাহী থেকে কাজী শাহেদ: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনও উদঘাটন হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যারহস্য উন্মোচনের দাবি করা হলেও তাতে সন্তুষ্ট নন শিক্ষকের সহকর্মীরা। এখন পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রমের উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই।
র্যাবের হাতে ৬ জন গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, শিগগিরই এ হত্যাকাণ্ডের চার্জশিট দেওয়া হবে। কিন্তু গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী না দেওয়ায় বেকায়দায় পড়ে পুলিশ। ফলে থমকে আছে মামলার তদন্ত কার্যক্রম।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর হোসেন দাবি করেন, তারা তদন্তে সঠিক পথে আছেন। যুবদল নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বলকে গ্রেফতার করা গেলে হত্যাকাণ্ডের পুরো ছক পরিস্কার হয়ে যাবে। তাকে ধরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলন হত্যাকাণ্ডের দুই মাস হতে চললো। এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে থেমে গেছে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচিও। তদন্ত কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ায়, শেষ পর্যন্ত লিলন হত্যামামলার সুরাহা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তার স্বজনরা।
এই হত্যাকাণ্ডের পর র্যাব রাজশাহী ও ঢাকা থেকে ৬ জনকে গ্রেফতার করে। তারা র্যাবের কাছে এ হত্যার দায় স্বীকার করে। তবে নভেম্বর মাসজুড়ে বিভিন্ন সময়ে ৬ জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করে। ফলে নতুন কোনো তথ্যই উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের ৫ ঘণ্টার মাথায় ফেসবুকে হঠাৎ পেজ খুলে হত্যার দায় স্বীকারকারী জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ-২ এর প্রধান আবদুর রহিমকে শনাক্তের দাবি করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে সে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি কামরুল হাসান মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ মামলার তদন্ত নিয়ে গড়িমসি শুরু করেছে। এখনও হত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ। তাই আবারও লাগাতার কর্মসূচির কথা ভাবা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৫ নভেম্বর রাবি সংলগ্ন চৌদ্দপাই এলাকায় নিজ বাসার সামনে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম শফিউল ইসলাম লিলন।