মৌলভীবাজার থেকে আজিজুল ইসলাম: মৌলভীবাজার জেলা সদরে মেলার নামে র্যাফেল ড্র টিকেট বিক্রি করে জেলার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজকরা। জেলা প্রশাসন এবিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।
জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বর মাসের শুরুতে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শুরু হয় বিজয় মেলা। এছাড়া ১৭ ডিসেম্বর রাজনগর উপজেলার করিমপুর চা বাগানে বিজয় মেলার নামে আরেকটি মেলা হয়। মৌলভীবাজারের মেলার অনুমোদন দেন জেলা প্রশাসক আর রাজনগরের করিমপুর চা বাগানের মেলার অনুমোদন দেন উপজেলা চেয়ারম্যান। বিজয় মেলাগুলো বিজয়ের মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও জানুয়ারি মাস জুড়ে চলছে। মেলার আয়োজকরা মেলার নামে জুয়া, হাউজি, ওয়ান টেন এবং র্যাফেল ড্র’র নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
একাধিক সুত্র জানায়, মৌলভীবাজারের মেলায় র্যাফেল ড্র’র পুরস্কার হিসেবে প্রতিদিন পাঁটি মোটরসাইকেল এবং রাজনগরের করিমপুর মেলায় প্রতিদিন তিনটি মোটরসাইকেল থাকছে। ট্রাকের উপর মোটর সাইকেল বসিয়ে মাইক যোগে প্রচারণা চালিয়ে প্রতিদিন ২০ টাকা মূল্যমানের টিকেট বিক্রি করা হয়। মোটর সাইকেলের আশায় যুব সমাজ প্রতিদিন লাখ লাখ টিকেট কিনছে।
কুলাউড়া শহরের মিলি প্লাজার দোকান কর্মচারী শহিদ মিয়া জানান, তিনি ও তার এক সহযোগি মিলে মোটরসাইকেলের আশায় প্রতিদিন ১০টি করে টিকেট কিনেন। শতাধিক টিকেট কিনেও তার ভাগ্যে কোন মোটরসাইকেল লাগেনি। তিনি জানান, শুধু মিলি প্লাজাতেই প্রতিদিন কয়েক হাজার টিকিট বিক্রি হয়। জয়চন্ডী ইউনিয়নের পুসাইনগর বাজারের ছুটই মিয়া ও তেরা মিয়া জানান, তারা প্রতিদিন চার-পাঁচটি করে টিকেট কিনেছেন কিন্তু কোন মোটর সাইকেল পান নি।
জেলার সবকটি উপজেলার গ্রামীণ বাজারগুলোতে প্রচারণা চালিয়ে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. কামাল হোসেন জানান, চেম্বার অব কমার্স গত ৩১ ডিসেম্বর মেলা বন্ধের দাবিতে বিশাল মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসক রহস্যময় কারণে মেলা বন্ধের কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না এবং মেলাও বন্ধ হচ্ছে না।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল হাসান জানান, মেলা বন্ধ করার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এব্যাপারে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান বলেন, এটা হওয়ার কথা নয়। তারপরও আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।