দিনাজপুর থেকে রতন সিং: অবরোধ আর হরতালের কারণে সপ্তাহখানেক বন্ধ থাকার পর বিশেষ নিরাপত্তায় রংপুর বিভাগের আট জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। এতে বোরো মৌসুমে সেচের জন্য জ্বালানি সংকট ঘটবে না বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অবরোধের মধ্যে পার্বতীপুর ডিপো থেকে তিনটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ৬০ লাখ লিটারের বেশি ডিজেল খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত আরো ২০ লাখ লিটার সরবরাহের অপেক্ষায় ছিল। এছাড়া ডিপোতে এক কোটি লিটার ডিজেল মজুদ রয়েছে।
পার্বতীপুর রেল হেড ডিপো থেকে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি রংপুর বিভাগের (দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা ) জেলাগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে।
নাশকতার আশংকায় কোম্পানিগুলো পার্বতীপুর রেলহেড ডিপো থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রাখে। পরে কর্তৃপক্ষ তেল পরিবহনের সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দিলে সরবরাহ শুরু করে তারা।
পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম জানান, আট জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহেনুল ইসলাম জানান, ডিলারদের কাছে নির্বিঘ্নে তেল সরবরাহ করতে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্য ও র্যাব সদস্যরাও নিরাপত্তা দিচ্ছে।
তবে মজুদ তেল সময়মতো পৌঁছানো না গেলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশংকা রয়েছে। আবার সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিলে খুচরা পর্যায়ে ডিজেলের দাম বেড়ে যেতে পারে।
দিনাজপুরের সদর উপজেলার কৃষক আলীমুদ্দিন জানান, হরতাল ও অবরোধের প্রথম কয়েক দিন তেল পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে তারা জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির আশংকা করছিলেন। কৃষক স্বপন চন্দ্র দাস জানান, গত বছরও সেচ মৌসুমে হরতালের কারণে তাদের বেশি মূল্য দিয়ে তেল কিনতে হয়েছে। তবে এবার নতুন করে তেল সরবরাহ শুরু হওয়ায় কৃষকদের আশংকা কমেছে।
পার্বতীপুর ডিপোর একটি সূত্র জানায়, তিনটি সরবরাহকারী কোম্পানি আট জেলায় ২২২টি ডিজেল ও পেট্রোল পাম্প এবং ৩৩৮টি এজেন্সিতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে। কৃষকদের কথা ভেবে ৬০ লাখ ৭৪ হাজার লিটার ডিজেল সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ২০ লাখ লিটার ডিজেল নিয়ে ট্যাংকলরি রওয়ানা দিয়েছে। এখনো প্রায় ১ কোটি ৪ লাখ লিটার ডিজেল ও ৯৩ হাজার লিটার পেট্রোল মজুদ রয়েছে।
রংপুর বিভাগের আটটি জেলায় কৃষি কাজের জন্য ব্যবহৃত ডিজেলের হিসাব সংরক্ষণ করে পার্বতীপুর উপজেলা কৃষি অফিস। তাদের হিসাব অনুযায়ী এবারের বোরো মৌসুমে ডিজেল সংকটে পড়বে না কৃষকরা।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ইলিয়াস ফারুক জানান, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপোতে ১ কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩২ লিটার ডিজেল মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি আট জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে ৯৯ হাজার লিটার ডিজেল মজুদ রয়েছে।