মৌলভীবাজার থেকে আজিজুল ইসলাম: সিলেট থেকে আখাউড়া পর্যন্ত প্রায় ১৭৮ কিলোমিটার রেলপথের বেশিরভাগ ক্লিপ চুরি হয়ে গেছে। এতে এ পথে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
লাইন এবং স্লিপারের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী ক্লিপগুলোর বেশিরভাগ চুরি হয়ে যাওয়ায় এ পথে স্বাভাবিকের চেয়ে কম গতিতে ট্রেন চলাচল করে। ক্লিপ চুরি ঠেকাতে রেল কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না।
কুলাউড়া থেকে লংলা, লংলা থেকে টিলাগাঁও এবং টিলাগাঁও থেকে মনু স্টেশনে যাওয়ার পথে এরকম চিত্র চোখে পড়ে। এসময় রেলওয়ে কর্মকর্তাদের উদাসীনতার বিষয়টি সম্পর্কেও জানা যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, এ পথের কম-বেশি ৫০ শতাংশ ক্লিপ চুরি হয়ে গেছে। এতে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন। ঝুঁকি এড়াতে স্বাভাবিক গতির চেয়ে কম গতিতে ট্রেন চলাচল করে। গতি স্বাভাবিক রাখলে ট্রেনের বগিগুলো লাফিয়ে উঠে। তাই চালকরা ধীর গতিতে ট্রেন চালান। ফলে আন্তঃনগর ট্রেনগুলো প্রায়শই নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে এক-দুই ঘন্টা দেরিতে গন্তব্যে পৌঁছায়। ক্লিপ ও ফিশপ্লেট চুরির কারণে ঘন ঘন ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, জনবল সংকটে কয়েকটি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ পথের রেললাইন অনেকটাই অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। কুলাউড়ার ভাটেরা, লংলা ও টিলাগাঁও স্টেশন বন্ধ। কোনোরকমে চলছে ছকাপন ও মনু স্টেশন। যদি এক উপজেলার মধ্যে পাঁচটি স্টেশন বন্ধ থাকে তবে এর মধ্যবর্তী রেলপথ অনেকটাই অরক্ষিত থাকে। এতে ক্লিপ চুরির ঘটনা বেড়েছে। স্টেশন চালু থাকার সময় রেলপথের বেশিরভাগ জায়গা কর্মকর্তাদের নিয়মিত তদারকির মধ্যে থাকত।
স্থানীয় লোকজন জানায়, রাতের বেলা চোরচক্র ক্লিপ খুলে নেয়। দিনে নিলে মানুষের নজরে পড়তো। এসব ক্লিপ ভাঙারি ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ট্রাক বোঝাই করে চট্রগ্রাম ও ঢাকায় পাচার করা হয়। ভাঙারি মালামালের ট্রাকে কয়েকবার ক্লিপ ধর পড়েছে বলেও শোনা যায়। কিন্তু আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে ফের ব্যবসা চালিয়ে যায় ভাঙারি ব্যবসায়ীরা। এরাই মূলত চোরচক্রের পৃষ্ঠপোষক। এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে রেলপথ অনেকাংশেই নিরাপদ হবে বলে জানান স্থানীয় মানুষজন।
ঊর্ধ্বতন সহকারী প্রকৌশলী (পথ) এরফানুর রহমান জানান, চুরি হয়েছে মুলত বিভিন্ন সময়ে। ইতোমধ্যে একটি চাহিদা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া আছে। তাছাড়া সময় সময় রেলপথ মেরামতও করা হচ্ছে ।