বালু সংকটে বন্ধ কুয়াকাটাগামী সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে সংবাদদাতা: বালুমহালের ইজারাদারের খামখেয়ালীর কারণে পাঁচদিন ধরে বন্ধ রয়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের শেখ রাসেল ও শেখ জামাল সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ। এ কারণে জুন মাসে শেখ রাসেল সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

জানা যায়, সাগর মোহনায় জেগে ওঠা চরের বালু দিয়ে সেতু দুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হলেও সম্প্রতি ওই বালুমহাল ইজারা নেয় কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ বারেক মোল্লার মেয়ে জামাই’র মালিকানাধীন মেসার্স মাদার ইন্টারন্যাশনাল। আগে বালুমহাল থেকে প্রতি ঘনফুট বালুর জন্য সরবরাহকারী ২০ পয়সা এবং ৪০ পয়সা খাজনা দিতে হতো। কিন্তু বালুমহাল ইজারা নিয়েই তারা দাবি করেন দেড় টাকা। সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এক টাকা দিতে রাজি হলেও তারা রাজি না হয়ে বালু সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় সেতু দুটির সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ।

সেতু নির্মাণকারী যৌথ প্রতিষ্ঠান (টিএসএল-আরআইভি) এর প্রকল্প ম্যানেজার প্রকৌশলী শামীম রেজা জানান, পাঁচদিন ধরে বালু সরবরাহ বন্ধের কারণে সংযোগ সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি জানান, দেশের কোথাও বালু উত্তোলনের ইজারা রেট সিএফটি প্রতি ২০ পয়সার বেশি নেই। অথচ এখানে দাবি করছে দেড় টাকা। এ বছরের এপ্রিল মাসে অন্তত শেখ রাসেল সেতুর কাজ সম্পন্ন করে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তরের কথা ছিল। শুধু বালুর কারণে তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বালুমহলের ইজারাদার নজরুল ইসলামের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।

তবে এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক মনোনয়ন প্রত্যাশীর প্রশ্রয়ে নজরুল এলাকার উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত করতে হঠাৎ বালুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ এ ব্রিজ নির্মাণ হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান সরকারের সফলতা হবে যা তিনি মানতে পারছেন না।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের পটুয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, বালু সরবরাহ করা না করা ঠিকাদারের কাজ। তারপরও সেতু নির্মাণের স্বার্থে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে তিনি জানান।

শেখ রাসেল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১২ সালে। অ্যাপ্রোচসহ সংযোগ সড়কের জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতায় কাজটি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে। সর্বশেষ এ বছর (২০১৫) মার্চে সেতুর কাজ শেষ করার কথা। ইতোমধ্যে সকল স্প্যানের গার্ডার স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন বাকি আছে সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। কিন্তু বালু সংকটে সংযোগ সড়ক নির্মাণও বন্ধ হয়ে যায়।