শেরপুর থেকে রেজাউল করিম বকুল: শেরপুরের পাহাড়ি জনগোষ্ঠির কাজের সুযোগ এমনিতেই কম। জীবিকার জন্যে গহীন বন থেকে লাকড়ি আর ঝরাপাতা সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করে কোনোরকমে সংসার চালায় তারা। এজন্য অনেকসময় তারা বনের গাছ কাটতে বাধ্য হতো। এমন পরিস্থিতিতে শেরপুরের সীমান্তবর্তী কর্ণঝোড়া রাবার বাগান গারো পাহাড়ের অধিবাসীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
এখানকার শ্রমজীবীরা জানান, এখন তারা বনের গাছ কাটার পরিবর্তে রাবার বাগান পরিচর্যা ও রাবার রস সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।বাড়ির কাছেই সৃষ্টি হয়েছে আয়-রোজগারের পথ।নিয়মিত আয়-রোজগার হওয়ায় এখন আর তারা চুরি করে বনের গাছ কাটেন না।বাগানে কাজ করে আর্থিক, সামাজিক ও নৈতিকভাবে উন্নতি হচ্ছে তারা।এখন তারা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য স্কুল-কলেজে পাঠাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কর্ণঝোড়া পাহাড়ে বনবিভাগের কাছ থেকে ৬২০ একর জমি নেয় বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন।এই জমিতে ১৯৯৪ সালে কর্ণঝোড়া রাবার এস্টেট গড়ে ওঠে। এখানে রাবার গাছের উৎপাদিত রস থেকে রাবার উৎপাদন ও প্রসেজিং কারখানা চালু করা হয়।এতে রাবার বাগানে স্থানীয় জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে কর্ণঝোড়া রাবার বাগানে নিয়মিত ৭০ জন শ্রমিক কাজ করছেন।একেকজন শ্রমিকের তত্বাবধানে তিনশ করে রাবার গাছ রয়েছে।প্রতিদিন একেকজন শ্রমিক গড়ে সাড়ে চারশ থেকে পাঁচশ টাকা আয় করছেন।
রাবার বাগানের কর্মকর্তারা জানান, কর্ণঝোড়া রাবার বাগানে প্রতিদিন তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার কেজি রাবার পাওয়া যায়।যা প্রসেজিংয়ের মাধ্যমে আটশ থেকে নয়শ কেজি আরএসএস রাবার উৎপাদিত হয়।এখানকার রাবারের মানও ভাল।কর্ণঝোড়া রাবার এস্টেটে বিদ্যুৎ না থাকায় তাদের উৎপাদন কম হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও রাবার বাগান কর্তপক্ষ বলছেন, এখানে আরো রাবার বাগান গড়ে তোলার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।এখানকার আবহাওয়া ও মাটি রাবার চাষের খুবই উপযোগি।এতে পাহাড়ের জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।