মানুষ মেরে কেউ কখনো বিজয়ী হতে পারেনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম

কিশোরগঞ্জ থেকে মোস্তফা কামাল: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মো. নাসিম বলেছেন, খালেদা জিয়া এখন অবরোধের নামে ঘরে বসে মানুষ মারছেন। তার ডাকে মানুষ কোন সাড়া দিচ্ছেন না। জনজীবন স্বাভাবিক রয়েছে, যানবাহন চলছে। মানুষ জীবিকার টানে বের হচ্ছে। খালেদা জিয়া এখন গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। মানুষ হত্যা করে কেউ কখনো বিজয়ী হতে পারেনি, খালেদা জিয়াও পারবেন না। ২০১৯ সালে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে বলেও মন্ত্রী ঘোষণা দেন। আর সেই নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাবে এবং শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী নাসিম বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের সার্কিট হাউজে স্থানীয় সুধী মহলের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।

Kishoreganj (Health Minister Nasim)-05-01-2015=
বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী  মো. নাসিম

মন্ত্রী আরও বলেন, জনগণের নেতা মানুষ হত্যা করে, এই ইতিহাস বিশ্বের কোথাও নেই। আমরাও বিরোধী দলে থাকতে আন্দোলন করে মার খেয়েছি, রক্তাক্ত হয়েছি। কিন্তু মানুষ হত্যার কথা চিন্তা করিনি, পুলিশের গায়ে হাত দেইনি। এ পর্যন্ত যে ৫৫ জন মানুষ হত্যা করা হয়েছে, তারা বিএনপির প্রতিপক্ষ নয়। চৌদ্দগ্রামে পেট্রলবোমায় যে ৮জন মানুষ হত্যা করা হয়েছে, এর মধ্যে একজন বিএনপি কর্মীও রয়েছেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মন্ত্রী নাসিম আরো বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে মারা গেছেন। প্রধানমন্ত্রী সমবেদনা জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে রাখা হলো। অথচ সেসময় একটি সুযোগ সৃষ্টি হতে পারতো। মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা না থাকলে কোনদিনই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হবে না। আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি, চার নেতাকে হারিয়েছি। শেখ হাসিনাকে হারাতে চাই না। শেখ হাসিনা না থাকলে জঙ্গিরা পাকিস্তানের মত স্কুলে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের হত্যা করতো। আজ পরীক্ষার্থীদের ধংসের পথে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। পরীক্ষার্থীরা কি দোষ করেছে?

স্বাস্থ্যমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জামায়াতের নেত্রী এবং জঙ্গি নেত্রী আখ্যা দিয়ে বলেন, খালেদা জিয়ার এজেন্ডা হচ্ছে জামায়াতের এজেন্ডা। আসলে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর  জন্যই এই নাশকতা চালানো হচ্ছে। আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ঘোষণা দিয়েছিল বলেই জনগণ ভোট দিয়েছিল। আদালতে নিরপেক্ষভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে। সমালোচকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, সংবিধানের কোথাও লেখা নেই কত ভাগ ভোট পেতে হবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সন্ত্রাসের মাঝেও ৪০ ভাগ ভোট পড়েছে, এটাই অনেক। তিনি বলেন, এত কিছুর মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রী নাশকতার প্রতিবাদে ১৪ দলের পক্ষ থেকে আগামী রোববার ঘোষিত দেশব্যাপী বিকাল ৪টা থেকে এক ঘন্টার মানববন্ধ কর্মসূচী কিশোরগঞ্জে সফল করার জন্য সকলকে আহবান জানান। তিনি সদর উপজেলার যশোদল এলাকায় মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের নামে নির্মাণাধীন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, করিমগঞ্জে নির্মাণাধীন বেসরকারি আবদুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শন করেন। এছাড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক এবং বিএমএ নেতাদের সঙ্গেও মতবিনিময় সভা করেন।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কিশোরগঞ্জ-২ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট সোহরাবউদ্দিন, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ ওয়াহিদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমএ আফজাল, জেলা গণতন্ত্রী পার্টিও সভাপতি অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী এনায়েতুর রহমান, জেলা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সহিদুল আলম, সিভিল সার্জন ডা. মৃণাল কান্তি প-িত, বিএমএ সভাপতি ডা. মাহবুব ইকবাল, জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মোস্তফা কামাল, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।