ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি: কাউখালীতে বেকারদের সাড়া নেই

পিরোজপুর (কাউখালী) থেকে রবিউল হাসান রবিন: পিরোজপুরের কাউখালীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ঘরে ঘরে চাকুরি প্রদান বাস্তবায়নের জন্য “ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসুচি”(৩য় পর্ব) চালু করা হয়েছে। চাকুরি পেতে আগ্রহী বেকার যুব ও যুব মহিলাদের নিকট থেকে আবেদন আহবান করা হলেও ন্যাশনাল সার্ভিসে বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়ানোর ফলে প্রকৃত বেকারদের এ কর্মসূচিতে আবেদনে তেমন সাড়া নেই। তৃতীয় স্তরের এ প্রকল্পে বেকারদের বয়সসীমা বাড়ানো এবং নতুন নীতিমালার কারণে অনেকে কর্মসূচিতে আবেদন করতে পারছেন না।

কাউখালী যুব উন্নয়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের দুই বছর মেয়াদি ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির তৃতীয় স্তরে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায় কোটা অনুযায়ী দুই হাজার ৪০০জন বেকার এ প্রকল্পে চাকুিরর সুবিধা পাবেন। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরে এ প্রকল্পে চাকুরির শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্ব নিম্ন এসএসসি পাস ও বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩৫ বছর থাকলেও এবার তৃতীয় দফার প্রকল্পে বা পরিবর্তন করা হয়েছে। সরকার তৃতীয় স্তরের প্রকল্পে শিক্ষাগত যোগ্যতা সর্ব নি¤œ এইচএসসি পাস ও বয়সসীমা ২৪ থেকে ৩৫ বছর করা হয়। ফলে এসএসসি পাস ও ২৪ বছরের কম বয়সের বেকাররা এবার এ কর্মসূচি থেকে বাদ পড়ছেন। এ উপজেলায় এ প্রকল্পে বেকারদের তেমন সাড়া মিলছেনা। রবিবার পর্যন্ত দুই হাজার ৪০০ পদের বিপরীতে মাত্র ১৭০ জন বেকার চাকুররির আবেদন করেছেন। ১২ ফেব্রুয়ারি আবেদনের শেষ তারিখ।

এ ব্যাপারে কাউখালী সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমীনুর রশীদ মিল্টন বলেন, বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ফাঁদে অনেক বেকার এ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প হতে অনেক বেকার বাদ পড়ছেন। এ ব্যাপারে কাউখালী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আল আমীন বাকলাই বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তৃতীয় স্তরে এসে প্রকল্পটির নীতিমালায় পরিবর্তন এসেছে। এতে বেকারদের আবেদনের বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়ানো হযেছে। ফলে এ বাধ্যবাদকতায় অনেক বেকার এ প্রকল্পে আবেদন করতে পারছেনা।

২০০৮ সালের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারভুক্ত ‘ন্যাশানাল সার্ভিস কর্মসূচি’-এর সম্প্রসারিত এ কর্মসূচির আওতায় ১৭ জেলার ১৭টি উপজেলার ২৪ থেকে ৩৫ বছরের মোট ৪২ হাজার ৫০০ জন বেকার নারী-পুরুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর জন্য সরকারের চলতি অর্থবছরের বাজেট থেকে খরচ হবে ১২২ কোটি টাকা। দুই বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে ৬৬১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। উপজেলাগুলো হচ্ছে, বরিশালের মেহেদীগঞ্জ, শরিয়তপুরের গুশাইর হাট, জামালপুরের দেওয়াগঞ্জ, ময়মনসিংহের নান্দাইল, পিরোজপুরের কাউখালী, চাঁদপুরের হাইমচর, শেরপুর সদর, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, ঝালকাঠির নলছিটি, মাগুড়ার মহম্মদপুর, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, বাগেরহাটের চিতলমারী, সিরাজগঞ্জের চৌহালী, বান্দরবানের থানচি, নাটরের সিংড়া, খুলনার তেরখাতা ও কুমিল্লর মনোহরগঞ্জ।

২০১০ সালের ৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। একই বছরের ২০ মার্চ কুড়িগ্রাম জেলা থেকে এ কর্মসূচি যাত্রা শুরু করে।

ন্যাশনাল সার্ভিসের ৩ মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ১০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হয় এবং পরবর্তী ২ বছরের জন্য তাদের সরকারি দফতরে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হয়। এসময় তাদের প্রতিদিনের উপস্থিতির জন্য ২০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হয় ।