বিএনপির দুর্গ বরিশালে এখন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই দায় !

বরিশাল থেকে এম.মিরাজ হোসাইন: এক সময়ের বিএনপির দুর্গ বলে পরিচিত বরিশালে চলমান আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের মাঠে দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে ২০ দলের ডাকা চলমান অবরোধ ও হরতালের তেমন কোন প্রভাব নেই বরিশালে। প্রায় স্বাভাবিক দিনের মতই অতিবাহিত হচ্ছে হরতাল ও অবরোধের এক একটি দিন।

তবে নগরী ও আশপাশের এলাকায় মাঝে মধ্যে ঝটিকা বিক্ষোভ মিছিল করে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে আন্দোলনকারীরা। ভোরের সূর্র্য ওঠার আগে নগরীর লোকালয় শূন্য এলাকায় নেতাকর্মীরা অবরোধ ও হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে নামেই কর্মসূচি পালন করে আসছে। এর বাইরে তাদের আর কোন কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে না। দলের সমর্থকরা জানায়, বিএনপির ক্ষমতামলে সদর রোডে টাউন হল সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের ভিড় লেগেই থাকতো। আর মিছিল মিটিংয়েও নেতা-কর্মীদের ভিড়ের কারণে সামনে অগ্রসর হওয়া যেত না। শুধু তাই নয়। নেতাদের বাসায়ও লেগে থাকতো ভিড়। আর দলের সুবিধাভোগী নেতা-কর্মীর সংখ্যাও কম ছিল না। দলের সমর্থকরা জানায়, সেই আমলে যাদের দেখা যেত এখন তাদের অনেককেই খুঁজে পাওয়া যায় না । তবে আবার কখনও দল ক্ষমতায় আসলে তারা সুবিধা নিতে হাজির হয়ে যাবেন ঠিকই।

তবে চলমান অবরোধের প্রথম দিকে এতটা নিস্কিয় ছিল না দলের নেতা-কর্মীরা। অবরোধের সমর্থনে তখন তাদের প্রকাশ্যে মিছিল সভা করতে দেখা গেছে। মিছিলই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দলের কর্মীরা। দলের একাধিক কর্মী জানায়, মিছিল দাবি আদায়ের গণতান্ত্রিক পন্থা। কিন্ত ক্ষমতাসীন দল পুলিশ দিয়ে গণতান্ত্রিক পথকে রুখে দিয়েছে। মিছিলে লাঠিচার্জ ও বাধা দেওয়া এবং পরে নাশকতার মামলায় তাদের নাম জুড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্রস ফায়ারের নামে হত্যাতো চলছেই। এসব হয়রানির কারণে নেতারা অত্মগোপনে থাকায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।

বরিশাল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা এ্যাড. আবুল কালাম জানান, চলমান আন্দোলন ঠেকাতে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কয়েক দিনে অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে শতাধিক নেতাকর্মী। বিএনপি’র দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আন্দোলনের মাধ্যমে কাক্সিক্ষত ফলাফল পেতে হলে ধৈর্য্য হারা হলে চলে না । এটাও আন্দোলনের একটি কৌশল। সামনে আন্দোলন  আরো কঠোর হবে। সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। জেলা বিএনপি’র সভাপতি (দক্ষিণ) এবায়দুল হক জানান, বরিশাল এখনও বিএনপির ঘাঁটি। ধরে ধরে নিয়ে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যা করে সরকার আতঙ্ক সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। অস্ত্রের মুখে আন্দোলন দাবিয়ে রাখতে কেউ পারেনি। এ সরকারও পারবে না।