রামেক হাসপাতালের মেয়াদোত্তীর্ণ ৩০ লাখ টাকার ওষুধ ধ্বংস করা হয়

রাজশাহী থেকে কাজী শাহেদ: হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ওষুধ না পেয়ে যেখানে নাভিশ্বাস উঠে, সেখানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ভাণ্ডারে পড়ে ছিল ৩০ লাখ টাকার ওষুধ। দীর্ঘদিন ধরে ভাণ্ডারে পড়ে থাকা মেয়াদোত্তীর্ণ প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাসপাতালের ভাণ্ডারে থাকা এমক্সসিলিন, অপসোনিন, নরড্রিন, সিরাপ, ইনজেকশন, ট্যাবলেট ও হ্যান্ডওয়াস ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়।

রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১০ সাল থেকে ওষুধগুলো রামেক হাসপাতালের ভাণ্ডারে পড়ে ছিলো। ওষুধগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ সেগুলো ব্যবহার করতে পারছিল না। সেগুলো ভাণ্ডারের জায়গা নষ্ট করছিলো। এ কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওষুধগুলো নষ্ট করে ফেলার উদ্যোগ নেয়। বৃহস্পতিবার ওষুধগুলো ধ্বংস করা হয়।

রামেক হাসপাতালের ওষুধ ভাণ্ডারের এক কর্মকর্তা জানান, মেয়াদ শেষ হওয়ার ২ থেকে ৩ মাস বাকি থাকতে ঢাকা থেকে ওষুধগুলো পাঠানো হয়। যতো দ্রুত সম্ভব ওষুধগুলো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সময় কম থাকায় অনেক ওষুধ থেকে যায়। সেগুলো আর ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। যেসব ওষুধ নষ্ট করা হয়েছে সেগুলো বেশির ভাগ ২০১০ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে।

ঢাকা সিএমএইচ থেকে বিগত সময়ে এক হাজার পিস হ্যান্ডওয়াস এসেছিলো। ব্যবহারের মেয়াদ ছিলো মাত্র ৩ মাস। একটি হ্যান্ডওয়াস ব্যবহার করতে ২ থেকে ৩ মাসের মতো সময় লাগে। মাত্র ১০০ হ্যান্ডওয়াস ব্যবহার করতে পেরেছিলেন চিকিৎসকরা। তাতেই হ্যান্ডওয়াসগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, ঢাকা থেকেও যেসব ওষুধ এখানে পাঠানো হয় সেগুলোর মেয়াদও কম সময় থাকে। এ কারণে ওষুধগুলো ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।

রামেক হাসপাতাল ওষুধ ভাণ্ডরের সিনিয়র স্টোর কিপার আলী আকবর জানান, হাসপাতালের ওষুধ ভাণ্ডারের দায়িত্ব নেওয়া ৮ থেকে ৯ মাস হয়েছে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই ওষুধগুলো ভাণ্ডারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলো। পরিত্যক্ত ওষুধ কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়াও ওষুধগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় ভাণ্ডারে পড়ে থাকায় নতুন ওষুধগুলো রাখায় জায়গা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক আ স ম বরকতুল্লাহ জানান, রামেক হাসপাতালে যোগদান করার আগে থেকেই ভাণ্ডারে এসব ওষুধ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিলো। বিগত পরিচালকরা বিতর্কিত হবে বলে এ ধরনের উদ্যোগ নেননি। কিন্তু ওষুধগুলো আর ব্যবহারের যোগ্য নেই। শুধু ওষুধ ভাণ্ডারের কক্ষ দখল করে পড়ে আছে। সে কারণে তা ধ্বংস করা হয়েছে।