কিশোরগঞ্জ থেকে মোস্তফা কামাল : কিশোরগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। অপর আসামি শ্বাশুড়ি খালাস পেয়েছেন। বুধবার ট্রাইবুনালের বিচারক মো. সাদিক গোলাম সারোয়ার করিমগঞ্জের জাফরাবাদ নয়াপাড়া গ্রামের সূর্যকান্ত সূত্রধরের ছেলে উজ্বল কুমার সূত্রধরকে (৩৮) মৃত্যুদ- ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। তবে দণ্ডিত আসামি পলাতক রয়েছেন। মামলার অপর আসামি দণ্ডিতের মা গীতারাণী সূত্রধরকে ট্রাইবুনাল খালাস দিয়েছেন। রায়ের সময় গীতারাণী সূত্রধর কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের স্বজন ও মামলার বিবরণে জানা যায়, করিমগঞ্জ সদরের মোদকপাড়ার সুনীল কুমার মোদকের মেয়ে মনিরাণী সূত্রধরকে স্বামী উজ্বল সূত্রধর ও শাশুড়ি গীতারানী সূত্রধর প্রায়ই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সইতে না পেরে ২০০২ সালের ১৫ জুন মনিরাণী বাবার বাড়ি চলে যান। ১২ দিন পর ২৭ জুন মনিরাণীকে আবার স্বামীর বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এর দু’সপ্তাহ পর ১০ জুলাই রাতে মনিরাণীকে স্বামীর বাড়িতে নিার্যতন চালিয়ে হত্যা করে বাড়ির পেছনে নারিকেল গাছে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালানো হয়। খবর পেয়ে করিমগঞ্জ থানার পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে জেলা হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত করালে নির্যাতনে হত্যার আলামত ধরা পড়ে। এসময় নিহতের ৩ বছর ও ১১ মাসের দুটি পুত্র সন্তান ছিল।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই উত্তম কুমার মোদক বাদী হয়ে নিহতের স্বামী উজ্বল কুমার সূত্রধর ও শাশুড়ি গীতারাণী সূত্রধরকে আসামি করে ২০০২ সালের ২১ জুলাই করিমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সালেমুজ্জামান ২০০২ সালের ১৬ নভেম্বর আদালতে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত স্বামী উজ্বলের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়ে শাশুড়ি গীতারাণী সূত্রধরকে খালাস দিয়েছেন।