শেরপুর থেকে হাকিম বাবুল: শেরপুরে বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশী বাঁধায় বিএনপির গণমিছিল পণ্ড হয়ে গেছে। এসময় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই পুলিশ কনস্টেবল এবং শহর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানসহ ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে উভয় পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, হরতালের সমর্থনে শেরপুর জেলা বিএনপি বৃহস্পতিবার শহরে গণমিছিল ও দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়। বিকেল সোয়া তিনটার দিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেলের নেতৃত্বে শহরের রঘুনাথ বাজার এলাকায় তার বাসভবন থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি রঘুনাথ বাজার দলীয় কার্যালয়ে আসার পথে কালিমন্দির এলাকায় পুলিশ সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে বাঁধা দেয়। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের সাথে তর্কবিতর্কে লিপ্ত হলে উভয়পক্ষে ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকলে উভয়পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পুলিশ মিছিলকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মিছিলকারীরা আশপাশের বাসাবাড়ি ও দোকানপাটের আড়াল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকলে পুরো রঘুনাথ বাজার এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। দোকান পাট বন্ধ ও রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় আধা ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষের ঘটনায় ইটপাটকেলের আঘাত ও পুলিশের লাঠিচার্জে দুই পুলিশসহ বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়।
পরে বিএনপি নেতাকর্মীরা সংঘঠিত হয়ে বিএনপি নেতা রুবেলের বাসার পেছন দিক দিয়ে পুরাতন গরুহাটি ও নিউমার্কেট এলাকা দিয়ে একটি অংশ রঘুনাথ বাজার এলাকায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হাজির হয়। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশী ঘেরাওয়ের মধ্যে দলীয় কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদুল হক রুবেল, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক আশীষ, মামুনুর রশিদ পলাশ, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হযরত আলী, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মাছুদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদুল হক রুবেল অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ আমাদের পুর্বঘোষিত গণমিছিল কর্মসূিচ পালনে বাঁধা দিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসার সময় বিনা উস্কানীতে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে আমাদের অন্তত ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ আমাদের গণমিছিল পণ্ড করে দিলেও শত বাঁধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হরতাল চলছে। নাশকতার আশংকায় শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিএনপির মিছিল থেকে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করাতে দুই কনস্টেবল আহত হয়। পুলিশ আক্রান্ত হওয়ার পর লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।