কিশোরগঞ্জে বাসে পেট্রলবোমা হামলার আসামি আটক, আদালতে জবানবন্দি

কিশোরগঞ্জ থেকে মোস্তফা কামাল: কিশোরগঞ্জে যাত্রীবাহী বাসে ৪ মার্চ রাতে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে আটক বিএনপি কর্মী মেহেদী হাসান উজ্বল (১৯) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বিন্নাটি টুইয়ারচর গ্রামের ফেরদৌস মিয়ার ছেলে উজ্বলকে মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর উপজেলার মাধববাড়ি এলাকা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল গ্রেফতার করে।

বুধবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউল আকবরের খাস কামড়ায় ১৬৪ ধারায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা এবং সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন। পেট্রলবোমা হামলায় উজ্বল নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করাসহ আরও কয়েকজনের নাম বললেও এ মুহুর্তে পুলিশ অন্যদের নাম বলছেনা। তবে এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর বুধবার বিকেলেই সদর উপজেলার বিন্নাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা লুৎলফুল বারী খোকনকে (৫৮) পুলিশ আটক করেছে।

৪ মার্চ রাত ১১টার দিকে নেত্রকোনা থেকে সিলেটের ভোলাগঞ্জগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানপুর এলাকায় দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমা হামলা চালায়। এতে ৬ নারী-পুরুষ দগ্ধসহ ১৭ জন আহত হন।

এ ঘটনায় সদর থানার এসআই শাহাদাত বাদী হয়ে যুবদল নেতা ইব্রাহিম মোল্লাকে (৩২) প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এসআই মিনহাজকে। মেহেদী হাসান উজ্বল এ মামলার ৪ নং এজাহার নামীয় আসামি বলে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত উজ্বলসহ বিএনপি-জামায়াতের মোট ৯ নেতা-কর্মীকে আইন-শৃংখলা বাহিনী গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলো জামায়াতের বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক সাবেক জেলা আমীর মাওলানা তৈয়বুজ্জামান, পৌর জামায়াতের আমীর মাওলানা একেএম সানাউল্লাহ, পৌর যুবদল সভাপতি ও ৩নং পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হানিফউদ্দিন আহাম্মদ রনক, বিন্নাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুল বারী খোকন, যুবদল নেতা জহিরুল ইসলাম, আল আমিন, লোকমান ও জাকারুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, স্বীকারোক্তি প্রদানকারী মেহেদী হাসান উজ্বল জয়দেবপুরের মাধববাড়ি এলাকার ‘ফারিয়া টেইলার্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে। সে ঘটনার দিন পেট্রলবোমা হামলায় অংশ নিয়ে আবার জয়দেবপুরের কর্মস্থলে চলে যায়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের এসআই মুর্শেদ জামান, এসআই মতিউর রহমান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিনহাজের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে কর্মস্থল থেকে বের হবার পর উজ্বলকে গ্রেফতার করে।