নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) থেকে অলিউল হক ডলার: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার গুঠইল গ্রামে ডায়রিয়ার মারাত্মক প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত একজন শিশুসহ দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নাচোল উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি আছে প্রায় ১৫ জন রোগী। নাচোল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নূরজাহান ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
নাচোল উপজেলার গুঠইল গ্রামে ৫ মার্চ থেকে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। সেদিনই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই গ্রামের নজরুল ইসলামের ১০ মাসের শিশু নাজিরুদ্দিন নাচোল হাসপাতালে ভর্তি হয়। শিশুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেও শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে ১০ মার্চ তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শিশুটি মারা যায়।
৮ মার্চ একই গ্রামের চারজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নাচোল হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুই দিন পর মারা যায় গুঠইল গ্রামের মৃত দাসুরুদ্দিনের ছেলে সিদ্দিক (৭৪)। নাজিরুদ্দিন ও সিদ্দিক একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে।
গুঠইল গ্রামে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়লেও সেখানে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো মেডিকেল টিম পরিদর্শনে যায়নি। এ ব্যাপারে নাচোল উপজেলা হাসপাতালের ইউএইচএ ডা. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, দ্রুতই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে গুঠইল গ্রামে সরেজমিন গেলে সেখানে মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুঠইল ঈদগাহ পাড়ায় অবস্থিত একটি বড়পুকুরে ৮-১০ দিন আগে হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা ও গ্যাস প্রয়োগ করার ফলে পানি বিষাক্ত হয়ে পড়ে এবং পুকুরে মরা মাছ ভেসে ওঠে। গ্রামবাসীর অনেকেই খাবার জন্য সে মাছ ধরে নিয়ে যায়। এলাকাবাসীর ধারণা, পুকুরের দুষিত পানি ব্যবহার ও মাছ খাবার কারণেই এ ডায়রিয়ার প্রকোপ।
গুঠইল গ্রামের বাসিন্দা মুন্সী হযরত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ইয়াসিন আলী জানান, গত কয়েক দিন থেকে গুঠইলে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও কোনো মেডিকেল টিম পরিদর্শনে আসেননি। তিনি দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।
বুধবার রাতে নাচোল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ডায়রিয়া আক্রান্তদের দেখতে যান এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাছে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেন।