মধুপুর (টাঙ্গাইল) থেকে আব্দুল্লাহ্ আবু এহসান: টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার গাড়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুল হকের হাতে যৌন হয়রানীর ঘটনাটি তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় শনিবার রাতে ধনবাড়ী থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মনিরুজ্জামান এর নেতৃত্বে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযুক্ত শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জমা দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ শরিফুল ইসলাম জানান, তদন্তে শিক্ষকের হাতে স্কুলছাত্রী যৌন হয়রানীর ঘটনাটি সত্য প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষকে বহিস্কারসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের কাছে রোববার প্রেরণ করা হয়েছে।
এ দিকে তদন্তে ঘটনা সত্য প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষক মরিয়া হয়ে উঠেছে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে। এমতাবস্থায় শনিবার রাতে ওই শিক্ষক আরও ৩/৪ জন শিক্ষকের সহায়তায় ভিকটিম ওই স্কুল ছাত্রী ও তার বাবাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে ধনবাড়ী উপজেলা সদরের চালাষ চৌরাস্তা মোড়ের একটি বাসায় আটকে রাখে এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। খবর পেয়ে ধনবাড়ী থানার ওসি মিজানুর রহমান ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে ওই বাসা থেকে ভিকটিম ছাত্রী ও তার বাবকে উদ্ধার করে এবং স্বাক্ষর নেওয়া সকল কাগজপত্র জব্দ করেন। এ সময় এ কাজে সহায়তা করার অভিযোগে গাড়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বাবলু মিয়াকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় ভিকটিম স্কুল ছাত্রী নিজে বাদী হয়ে ধনবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করে।
ওসি মিজানুর রহমান জানান, গ্রেফতার করা অফিস সহকারী বাবলু মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি আজিজুল হকসহ অন্যদের গ্রেফতারে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
২৩ ফেরে্রুয়ারি গাড়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুল হকের কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে ওই শিক্ষক দ্বারা যৌন হয়রানীর শিকার হয়। ঘটনাটি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি মিলে ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পৃথক ৩টি কমিটির তদন্তেই ঘটনাটির সত্যতা পেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এ দিকে এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের হুমকীর মুখে ওই শিক্ষার্থী অদ্যাবধি বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না।
শনিবার রাতে মামলা দায়েরের পর পুলিশ পাহারায় ওই ভিকটিম ও তার বাবাকে বাড়ি পৌঁছে দেয় ধনবাড়ী থানা পুলিশ। মেয়ের বাবা জানান, তিনি এখন তার মা মরা ওই নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।