রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) থেকে মো. মাহবুবুল আলম মিন্টু: লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হায়দরগঞ্জে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘষে গুরুতর আহত সেই যুবলীগ নেতা মনু মিয়া (৩৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থা মারা গেছে।
মনু মিয়া উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক ও একই এলাকার আমান উল্যার পুত্র বলে জানা গেছে। তার মৃত্যুর বিষয়টি মঙ্গলবার সকাল (১৭ মার্চ) ১১টায় নিশ্চিত করেছেন চর আবাবিল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কৌশিক আহমদ সোহেল। ঢামেক থেকে লাশ রায়পুর আনার প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান।
যুবলীগ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে মিছিল ও প্রতিবাদ সভার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল হাসান রাছেল।
এদিকে যুবলীগ নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় থমথমে ভাব বিরাজ করছে। উত্তেজিত অবস্থায় নেতাকর্মীদের সংগঠিত হতে দেখা গেছে। যেকোন মুহুর্তে আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
যুবলীগ নেতাদের অভিযোগ, ১৩ মার্চ একটি শালিসী বৈঠকের বিষয়ে চেয়ারম্যান শহীদ উল্যা বিএসসির সাথে তর্ক হয় যুবলীগকর্মী মো. মনুর। ওই সময় দু’জনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় চেয়ারম্যান মুখে জখম হন। ওই সময় চেয়ারম্যানের ছেলে মঞ্জুর হোসেন সুমনের নেতৃত্বে সশস্ত্র লোকজনের হামলায় গুরুতর আহত হয় মনু। একই সময়ে হামকালীরা দু’টি বসত ঘরও ভাঙচুর করে। এ নিয়ে উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয় অন্তত: ১৫ জন। মনু মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢামেকে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় পরদিন ১৪ মার্চ রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুলাল হাওলাদারের অনুসারী যুবলীগ নেতা নাদিম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। একই রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও স্থানীয় চর আবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ উল্যা বিএসসির ছেলে মঞ্জুর হোসেন সুমন বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
চর আবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান শহীদ উল্যা বিএসপির ছেলে মঞ্জুর হোসেন সুমন বলেন, ২/৩বছর ধরে দুলাল হওলাদারের নেতৃত্বে হায়দরগঞ্জ বাজারে উলফা বাহিনী তৈরি করে এলাকার অসামাজিক কাজ করা হচ্ছে। এসব ঘটনার তার বাবা বাধা ও প্রতিবাদ করলে তারা পরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যানকে জখম করে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুলাল হাওলাদার বলেন, ‘চেয়ারম্যানের সঙ্গে যুবলীগের মনু মিয়ার জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে চেয়ারম্যানের ছেলে সুমনের নেতৃত্বে লোকজন বাজারে এসে মনুকে বেদম মারধর করে নাদিমের ঘর ও শুকুরের দোকান ভাঙচুর করেন। এখানে উলফা গ্রুপ বা বাহিনী বলতে কিছুই নেই।’
রায়পুর থানার ওসি একেএম মনজুরুল হক আকন্দ যুবলীগ নেতা মনু মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।