কলাপাড়ার সাপুরিয়া খালের ব্রিজ এখন মৃত্যুফাঁদ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) থেকে মিলন কর্মকার রাজু: ব্রিজে উঠলেই কেঁপে উঠে পিলার। স্লাবগুলো ভেঙ্গে খালে পড়ে যাওয়ায় এক স্লাব থেকে অন্য স্লাবে যেতে হয় লাফিয়ে। বন্ধ রয়েছে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজার সংলগ্ন ব্রিজের চিত্র এটি। এ ব্রিজের স্লাব ভেঙ্গে সাপুরিয়া খালে পড়ে যাওয়ায় কলাপাড়া উপজেলা সদরের সাথে ১৫টি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। মৃত্যুফাঁদ জেনেও নড়বড়ে এ ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ ব্রিজটি সংস্কারের কোনও উদ্যেগ নেওয়া হয়নি।

KALAPARA PIC-01(18.03.2015)IRON BRIDZE
স্লাবগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় এক স্লাব থেকে অন্য স্লাবে যেতে হয় লাফিয়ে

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ব্রিজের একাধিক স্লাব ভেঙ্গে খালে পড়ে যায়। ব্রিজটির অন্তত পাঁচটি ফুট স্লাব খালে পড়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। দুই বছর আগে ব্রিজটির লোহার এ্যাঙ্গেল ভেঙ্গে একদিকে কাত হয়ে পড়লেও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করত, কিন্তু এখন ব্রিজের স্লাব ভেঙ্গে পড়ায় বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ। এতে বিপাকে পড়েছে মিঠাগঞ্জ,বালিয়াতলী ও পাশ্ববর্তী ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের ১৫ টি গ্রামের অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। ব্রিজের বেহাল দশার কারণে বিপাকে পড়েছে জয়বাংলা বাজারের শতশত ব্যবসায়ী। সড়ক পথে সরাসরি মালামাল পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় আরামগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসা, মিঠাগঞ্জ কেরাতুল কোরান মাদ্রাসা এবং মিঠাগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থী প্রতিদিন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী ও শিক্ষক মো. মঞ্জু জানান, প্রতিদিনই এ ব্রিজে দুর্ঘটনা ঘটছে। আর সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী ও রোগীরা। জরুরি প্রয়োজনে রোগীরা বাজারে ওষুধ কিনতেও আসতে পারছে না।

স্কুল ছাত্র জাফর, রিয়ামনি জানায়, “ব্রিজে ওডলেই পিলার কাঁপে, কিন্তু কি করমু স্কুলে তো যাইতে হবে। আর রোজই খালে ব্রিজ দিয়া মানুষ পড়ে হুনছি। স্কুলে যাওয়ার আর রাস্তা নাই, মোগো এইহান দিয়াই যাইতে হইবে”। অভিভাবক জহিরুল ইসলাম জানায়, “রোজ সকালে যহন ভাঢা থাহে তহন পোলারে কোলে কইর‌্যা খাল পার হইয়া স্কুলে দিয়া আই। আবার ভাঢার সময় বাসায় নেই। আমরা ঝুঁকি নিয়া পার হইলেও পোলামাইয়া লইয়া তো এই ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়া যাওয়া যায়না”।

বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, ব্রিজটি জরুরি মেরামত করতে না পারলে এটা ভেঙ্গে ফেলা উচিত। কেননা এ ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে বাজারে ও স্কুল-কলেজে যেতে আসতে প্রতিদনই দুর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা প্রায়ই ভেঙ্গে পড়া স্লাব খাল থেকে উঠিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করলেও ব্রিজ কাইত হয়ে পড়ার কারনে আবার তা পড়ে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী আবদুল মান্নান জানান, ব্রিজটির যে অবস্থা তাতে জরুরিভিত্তিতে নতুন একটি গার্ডার ব্রিজ করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, সরকারের আয়রন ব্রিজ করার কোনও পরিকল্পনা না থাকায় এখন গার্ডার ব্রিজ করতে হবে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।