গোপালগঞ্জ থেকে হায়দার হোসেন: গোপালগঞ্জে বুধবার সকালে স্থানীয় সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ মাঠে কমিউনিটি পুলিশের মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে হাজারো মানুষ যোগ দেয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ২০০৭ সালে সারাদেশে স্বল্প আকারে কমিউনিটি পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়। এতো বড় সম্মেলন এটাই প্রথম। আগামীতে গোপালগঞ্জে কোনও অপরাধ থাকবে না। কারণ পুলিশ-জনতা যখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে তখন আর অপরাধ থাকবে না। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে এমনিতে অপরাধ কম। এখানে মাদকের প্রভাব আছে। কমিউনিটি পুলিশের মাধ্যমে এ জেলাকে মাদকমুক্ত করতে হবে। আমি চাই জঙ্গী, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত গোপালগঞ্জ।
তিনি আরও বলেন, বৃটিশরা জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য প্রথম পুলিশ বাহিনী গঠন করে। পরে তারা নিজেদের জন্য কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থা চালু করে। তাই আগামীতে আমাদের পুলিশ বাহিনীকেও যথোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলে অপরাধ কমে আসবে। মানুষ শান্তিতে বসবাস করতে পারবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি বলেন, পুলিশের সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। আমাদের পুলিশ বাহিনী দেশে ও বিদেশে দক্ষতা দেখিয়েছে। অনেক সীমাবন্ধতা থাকার পরও আমাদের পুলিশ বাহিনী সুনামের সাথে কাজ করছে। বিএনপি-জামায়াত যে জঙ্গী ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলাচ্ছে পুলিশ তা কঠোর হাতে দমন করছে। তা না হলে বাংলাদেশের অবস্থা ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তানের মতো হতো।
স্বাগত বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ একে এম শহীদুল হক বলেছেন, ১৮৬১ সালের পুলিশ অ্যাক্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী পরিচালিত হতো। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন দমন করার জন্য তারা এই অ্যাক্ট করেছিল। পুলিশের সাথে জনগণের দুরত্বের কারণে জনগণ পুলিশকে তথ্য দিতে ভয় পেত। এই দুরত্ব দূর করতে কমিউনিটি পুলিশ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে পুলিশের ওপর জনগণের আস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। কমিউনিটি পুলিশ কোনও সমস্যার বিচার করবে না, নিষ্পত্তি করবে। বিচার করলে সমাস্যা থেকে যাবে। সামাজিক ব্যধিগুলো নির্মূল করতে কমিউনিটি পুলিশ কাজ করবে। এলাকাভিত্তিক সমস্যার সমাধান করবে। তাহলেই গণতান্ত্রিক পুলিশ ব্যবস্থা তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ দালালের মাধ্যমে থানায় যোগাযোগ করেন। এতে দালাল পয়সা নেয়, পুলিশকেও পয়সা দেয়। থানাগুলোকে দালালমুক্ত করতে হবে। তাহলে জনগণের পুলিশ প্রতিষ্ঠিত হবে।
ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাফুজুল হক নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মনিরুজ্জামান, গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, জেলা প্রশাসক মো: খলিলুল রহমান, পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান, জেলা কমিউনিটি পুলিশের আহবায়ক খোন্দকার এহিয়া খালেদ সাদি, সদস্য সচিব জাহেদ মাহমুদ বাপ্পি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সহকারি পুলিশ (সার্কেল) মুনিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও কমিটির সদস্যরা অংশ নেন। পরে শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি হয়।