কৃষি ব্যাংকের ৪০ বছরের শাখা স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ গ্রাহক, স্মারকলিপি পেশ

মৌলভীবাজার থেকে আজিজুল ইসলাম: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়ন থেকে কৃষি ব্যাংকের শাখা স্থানান্তরের প্রতিবাদে ক্ষোভে উত্তাল স্থানীয় মানুষ। মঙ্গলবার শাখা স্থানান্তরের প্রতিবাদে গ্রাহক ও স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ এবং অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

এলাকাবাসীর দেওয়া স্মারকলিপি থেকে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের কৃষি ব্যাংক শাখা ১৯৭৪ সনে স্থাপিত হয়। দীর্ঘ বছর ধরে উক্ত শাখাটি স্থানীয় কৃষকের এবং কৃষি উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। কৃষি ঋণ গ্রহণ করে ২ জন গ্রাহক খামার স্থাপনের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়নে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার লাভ করেন।

তবে বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে না চলা, অনলাইন ব্যাংকিং চালু না করা, প্রবাসীদের রেমিটেন্স প্রদানে গড়িমসি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অশোভন আচরণ, কৃষি ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও অযোগ্যকে প্রাধান্য দেওয়া ইত্যাদি নানাবিধ কারণে ব্যাংকের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

ব্যাংক স্থানান্তরের খবরে ব্যাংকের ৩ সহস্রাধিক গ্রাহক এবং এলাকার কৃষিজীবী মানুষের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষুব্ধ মানুষ মঙ্গলবার বরমচাল ইউনিয়নের কালা মিয়ার বাজারে কৃষি ব্যাংকের সম্মুখে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা খোরশেদ আলম খান সুইটের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বরমচাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান, কালা মিয়া বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাছুম আহমদ, আতিকুর রহমান, খয়রুল আলম চৌধুরী টিপু প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী বরাবর এলাকাবাসী স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। যার অনুলিপি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর, কৃষি ব্যাংকের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন শাখায় এবং মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসককে দেওয়া হয়েছে।

বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান জানান, ব্যাংকে এলাকার মানুষের কোটি কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে আছে। ব্যাংক পরিচালনায় ব্যর্থতার দায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিন তদন্ত করে তারপর স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিলে তা মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু তা না করে গ্রাহকদের না জানিয়ে শাখা স্থানান্তর করা ঠিক হবে না। শাখাটি স্থানান্তর হলে গ্রাহকরা চরম দুর্ভোগের শিকার হবে।
এ ব্যাপারে কৃষি ব্যাংক বরমচাল শাখার ব্যবস্থাপক এইচ এম মকবুল হোসেন জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের হেড অফিসের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শাখাটি স্থানান্তরে মৌখিক নির্দেশ পেয়েছি। এটাকে বরমচাল থেকে ব্রাহ্মণবাজার এলাকায় স্থানান্তর করা হবে। স্থানান্তরের লিখিত আদেশ হয়তো দু’এক দিনের মধ্যে পেয়ে যাবো।