দিনাজপুর থেকে রতন সিং: দিনাজপুরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের হরতাল-অবরোধে পেট্রোলবোমায় ট্রাক ও চালক-হেলপারকে অগ্নিদগ্ধ করার মামলায় ৪৩ জন বিএনপি-জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে। মামলা থেকে অব্যহতি পেয়েছেন ৯ জন। এদের মধ্যে ১ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন।
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরে ৯ জানুয়ারি মধ্যরাতে ২টি ট্রাক ও ১টি ট্যাংকলরীতে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি-জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। অগ্নিসংযোগে ২টি ট্রাক ও ট্যাংকলরীর ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়। ট্রাক ও ট্যাংকলরীর ৩ জন চালক ও ৩ জন হেলপার গুরুতর আহত হয়। আহতদের রংপুর ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাক ২টির মালিক নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার চৌমহনী বারাইশাল পাড়ার শিবু সরকার বাদী হয়ে ঘটনার পর দিন গত ১০ জানুয়ারি চিরিরবন্দর থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২২ জন বিএনপি-জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শম্ভুদাশ গুপ্ত সুমন তদন্ত করে ৪৩ জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার সকালে আদালতে চার্জশীট পেশ করেন। আসামিদের মধ্যে ২২জন এজাহারভুক্ত ও ২১জন আসামি তদন্তকালে দোষী প্রমাণিত হয়। মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ৯জন বিএনপি-জামায়াত-শিবির এর সক্রিয় ক্যাডারকে। এর মধ্যে রানীরবন্দর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান (২৪) ১৫ ফেব্রুয়ারি পুলিশ-বিজিবি’র সাথে সংঘর্ষে নিহত হন। অব্যাহতিপ্রাপ্ত ৮ জন হলেন মো. সিরাজুল হক, মো. আরিফ, মো. নজরুল ইসলাম, মো. রবিউল ইসলাম, রাজু আহমেদ, মাহবুবুর রহমান, মিজানুর রহমান বকুল ও তসলিম উদ্দীন জামায়াত-শিবিরের চিরিরবন্দর ও সৈয়দপুর উপজেলার সক্রিয়কর্মী।
চার্জশীটভুক্ত ৪৩ জনের মধ্যে ১৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও ২৪ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া ৮ জনই দিনাজপুর জেলা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। চাঞ্চল্যকর সন্ত্রাস বিরোধী মামলার প্রধান আসামী মকবুল হোসেন মুন্সি (৫৫) চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর ও উপজেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সেক্রেটারি। সাম্প্রতিক ব্যাপক সহিংসতার প্রধান উস্কানিদাতা ও নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযুক্ত পলাতক মকবুল ২৩ মামলার আসামি। তার পুরো পরিবার সন্ত্রাস ও নাশকতার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামি।
মঙ্গলবার সকালে এই চাঞ্চল্যকর মামলাটির চার্জশীট দিনাজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রেজাউল বারীর আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শম্ভুদাশ গুপ্ত সুমন পেশ করলে বিজ্ঞ বিচারক ২৯ মার্চ পুলিশী তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন।