নোয়াখালীতে ৩ শিক্ষকের উপর হামলা, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

নোয়াখালী থেকে জামাল হোসেন বিষাদ: নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদী বাজার অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে ঠুকে তিন সহকারী শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
আহত শিক্ষকরা হচ্ছেন- গণিতের সহকারী শিক্ষক পিন্টু আচার্য্য, ক্রীড়া শিক্ষক আবুল কাশেম ও গিয়াস উদ্দিন। তাঁদেরকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় ২৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার ক্লাস চলাকালীন বিকেল ৩টার দিকে বিদ্যালয় সংলগ্ন বাজিগর বাড়ির একটি ছেলে মাঠে ঘুড়ি উড়াচ্ছিল। এ সময় শিক্ষক পিন্টু আচার্য্য বাঁধা দিলেও ছেলেটি তা শোনেনি। পরে অন্য শিক্ষকরা তাকে শিক্ষক মিলনায়তনে ডেকে শাসিয়ে দেয়। ছেলেটি বাড়ি গিয়ে বিষয়টি জানালে তার ভাই সাগরের নেতৃত্বে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ৪০-৫০জন বখাটে লাঠিসোটা নিয়ে এসে শিক্ষক মিলনায়তনে ঠুকে হামলা চালায়। একই সাথে তারা মিলনায়তনে থাকা তিন শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করলে শিক্ষক পিন্টু আচার্য্যরে মাথায় আঘাত লেগে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এছাড়া গুরুতর আহত হয় অপর দুই শিক্ষক আবুল কাশেম ও গিয়াস উদ্দিন। এক পর্যায়ে শিক্ষকদের চিৎকারে অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসতে থাকলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।

পরে আহত শিক্ষকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে তাৎক্ষণিক নোয়াখালী-ঢাকা সড়কে অবরোধ করে। খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।

অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নাছির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, যা ঘটেছে তা অত্যন্ত নেক্কারজনক। আহত তিন শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি বৈঠক করেছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুধারাম থানার অফিসার ইনচার্জ (পরিদর্শক) নিজাম উদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএসএম আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে তিনিসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া পুলিশও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।