শেরপুর থেকে হাকিম বাবুল: শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দু’টি চোরাই গরু এবং গরু চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপসহ আন্ত:জেলা অপরাধীচক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতাার করেছে পুলিশ। ঝিনাইগাতীর ভালুকা গ্রাম থেকে এসব গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার পথে শনিবার রাতে মাটিয়াপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-ঝিনাইগাতীর ভালুকা গ্রামের আকরাম হোসেনের ছেলে ফরহাদ মিয়া (৩০), কুষ্টিয়া জেলার জাফর হোসেনের ছেলে জসিম উদ্দিন (২০), কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার রমজান আলীর ছেলে বাবুল মিয়া (২০), বাগেরহাট জেলার সাইফুল ইসলামের ছেলে আলামিন হোসেন (৩৪) ও নাটোর জেলার মনতাজ শেখের ছেলে পারভেজ মিয়া (৩৬)। গ্রেপ্তারকৃতদের ২৯ মার্চ রবিবার দুপুরে মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করলে আদালতের বিচারক তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।
ঝিনাইগাতী থানার ওসি ফসিহুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দুটি চোরাই গরু ও চুরির কাজে ব্যবহৃত প্রায় ১৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি পিকআপ সহ আন্ত:জেলা অপরাধী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে বিচারিক আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এদিকে, স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানায়, গ্রেফতারকৃতরা সবাই এলাকার ত্রাস আকরাম বাহিনীর সদস্য। আকরাম বাহিনী দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, ধর্ষণ, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা থেকে শুরু করে নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জিম্মি হয়ে পড়েছে স্থানীয় অধিবাসীরা। এ বাহিনীর অত্যাচারে ভালুকা গ্রামের কয়েকটি পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। আকরাম বাহিনীর ৫ সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। পুলিশের অভিযানে এক ছেলে গ্রেফতার হলেও বাহিনী প্রধান আকরাম পলাতক রয়েছে।
ভালুকা গ্রামের অধিবাসী গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আকরাম বাহিনীর কয়েকজন ধরা পড়েছে। এখন বড় চোরডারে ধরবার পাইলে ভালা হইতো। শান্তি মতন এলাকায় ঘুমাবার পাইতাম’। নূর ইসলাম নামে আরেক বাসিন্দা জানান, ‘আমার ৫০ হাজার টাকা দামের গরু দুইটা চুরি করেছিল আকরাম বাহিনী। আল্লার সহায় চোরেরা ইবার ধরা পড়ছে’। স্থানীয় অধিবাসী হাবীব মো. জিলানীসহ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, এক সময় আকরাম বাহিনীর সদস্যরা গারো পাহাড়ে উলফা সদস্যদের অস্ত্র বহনের কাজে নিয়োজিত ছিল। তখন থেকেই শুরু হয় আকরাম বাহিনীর উত্থান।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আকরাম বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ তো দূরের কথা মুখ খুলতেও সাহস পায় না। তারা বলেন, এ বাহিনীতে পুরুষদের পাশাপাশি নারী সদস্যও রয়েছে। বাহিনীর সদস্যরা কোন সমস্যায় পড়লে তাদের উদ্ধারের ব্যাপারে ওই নারী সদস্যদের ব্যবহার করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আকরাম বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় থানায় প্রায় ডজন খানেক মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে এসে আবারো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে।