মৌলভীবাজার থেকে আজিজুল ইসলাম: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর বস্তি গ্রাম থেকে রোববার গৃহবধু আজিরুন বেগমের (৩২) গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বামীসহ শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন গৃহবধুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে রান্নাঘরে বস্তাবন্দি করে রাখে বলে স্বজনরা অভিযোগ করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গৃহবধুর ভাই আব্দুল হকের থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, দুই ছেলে সন্তানের জননী গৃহবধু আজিরুন বেগমের সাথে স্বামী আনছার আহমদ ও তার পরিবারের সাথে বিরোধ চলছিল। এনিয়ে প্রায় চার মাস আগে গৃহবধু আজিরুন বেগম সন্তানসহ বাবার বাড়ি রাজনগর উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের কলাগ্রামে চলে যান।
৩১ মার্চ স্থানীয় লোকজনের মধ্যস্থতায় তিনি স্বামীরবাড়ি ফিরে আসেন। ফিরে আসার পরদিন ১ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১১টায় আনছার আহমদ ও তার পরিবারের লোকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে গৃহবধু আজিরুন বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে রান্নাঘরে বস্তাবন্দি করে রাখে। বোনের কোন খোঁজ না পেয়ে মামলার বাদী আব্দুল হক ৩ এপ্রিল তার বোনের বাড়ি গাজীপুর বস্তিতে আসেন। বোনকে না পেয়ে বাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে বাড়ির লোকজন একেকজন একেক রকম কথা বলেন।
কোনও সদুত্তোর না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান আব্দুল হক। রোববার (৫ মে) পুনরায় বোনের বাড়ি আসেন তিনি। এসময় রান্নাঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান এবং ঘর থেকে পঁচা লাশের গন্ধ পেয়ে তিনি বিষয়টি কুলাউড়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে জানান। চেয়ারম্যান বিষয়টি কুলাউড়া থানা পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় গৃহবধুর ভাই আব্দুল হক বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় ১৩ জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে গৃহবধুর শ্বশুড় উছমান আলী (৬৫), শ্বাশুড়ী হাছনা বেগম (৪০) ও ননদ রিমা আক্তার (১৭) কে আটক করেছে পুলিশ।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মতিয়ার রহমান জানান, ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদেরও আটকের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।