বরিশালের আকাশে ৮ এপ্রিল ডানা মেলবে রাষ্ট্রীয় বিমান

বরিশাল থেকে এম.মিরাজ হোসাইন: বরিশালের আকাশে আবারও ডানা মেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিমানের পাখা। বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে আট বছর পর এ পথে সপ্তাহে দু’দিন বিমানের ফ্লাইট চলাচল করবে। ৮ এপ্রিল থেকে এর যাত্রা শুরু হওয়ার কথা।

Biman
বিমানবন্দরে বিমান পরিচালনার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

বরিশাল বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মোঃ হানিফ গাজী জানান, ৮ এপ্রিল থেকে বিমানবন্দরে বিমান পরিচালনার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সচল রাখা হয়েছে বিমানবন্দরের নেভিগেশন বাতি। বর্তমানে বিমানবন্দরের ট্রাফিক সেক্টর ও নেটওয়ার্কিং সিস্টেমের উন্নয়ন কাজ চলছে। অন্যান্য সংস্কার কাজ শেষ পর্যায়ে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বরিশাল অফিসের ব্যবস্থাপক খলিলুর রহমান জানান, সপ্তাহের প্রতি রবি ও বুধবার ঢাকা থেকে বিকেল ৪টা এবং বরিশাল থেকে বিকেল ৪ টা ৫৫ মিনিটে বিমান ছাড়বে। বিমানের একমুখী ভাড়া ইকনমি ক্লাস তিন হাজার টাকা, কুইন ক্লাস সাড়ে তিন হাজার টাকা ও সুপার ক্লাস চার হাজার টাকা। ১ এপ্রিল থেকে বিমান বাংলাদেশ বরিশাল অফিস থেকে টিকিট বুকিং শুরু হয়েছে। এছাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও যাত্রীরা টিকিট কিনতে পারবেন।

সূত্রমতে, নদী-খালের দেশ বরিশালে জরুরি প্রয়োজনে ঢাকার সাথে যোগাযোগের জন্য বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। ১৯৬৮ সালে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে রহমতপুরে বিমানবন্দরের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হলেও বিমান চলাচল শুরু হতে সময় লাগে আরও ২৭ বছর। ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। এরপর ১৯৯৫ সালের ১৭ জুলাই অ্যারোবেঙ্গল এয়ারলাইন্সের ১৭ সিটের দুটি ওয়াই-১২ বিমান চলাচলের মধ্যদিয়ে বরিশালে বিমান চলাচল শুরু হয়।

এরপর রাষ্ট্রীয় পরিবহন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর বিমান চলাচল শুরু হয় একই বছরের ৩ ডিসেম্বর থেকে। তবে এই বিমানের সেবা তিন বছর পর বন্ধ হয়ে যায়। পরে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে ২০০৩ সালে আবারো বিমান বাংলাদেশ তাদের ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করলেও এটি বেশি দিন চলতে পারেনি। লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে ২০০৬ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সেবা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়।

শুধু রাষ্ট্রীয় বিমান নয়, বেসরকারি বিমান কোম্পানি অ্যারোবেঙ্গল এয়ারলাইন্স, পারাবত এয়ারলাইন্স, জিএমজি এয়ারলাইন্স ও সর্বশেষ ইউনাইটেড এয়ারওয়েজও বারবার তাদের সার্ভিস চালু ও বন্ধ রাখে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরে ৩৭ সিটের এয়ারক্রাফট নিয়ে চালু হয় বেসরকারি সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ফ্লাইট। লোকসানের অজুহাতে সেটিও ২০০৯ সালের ৫ মে বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পর ৮ এপ্রিল তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালু হতে যাওয়ায় বরিশালবাসী খুশি হলেও কেউ কেউ আবারও বন্ধের আশঙ্কা করছেন। বরিশাল নাগরিক সমাজেব সদস্য সচিব ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় বরিশালবাসী স্বভাবতই খুশি। তারা বিমান চালু হওয়াকে স্বাগত জানালেও অতীতের অভিজ্ঞতায় বারবার বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার উদাহরণে তাদের শঙ্কা কাটছে না।