কিশোরগঞ্জ থেকে মোস্তফা কামাল : কিশোরগঞ্জে দুই উলফা নেতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এরা হলেন ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার শীর্ষ নেতা মেজর রঞ্জন চৌধুরী (৫১) ও তার এ দেশীয় সহযোগী প্রদীপ মারাক (৬১)। বুধবার সকালে কিশোরগঞ্জের বিশেষ ট্রাইব্যুনালের জজ মুহম্মদ মাহবুব-উল-ইসলাম তার রায়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় দু’জনকে যাবজ্জীবন করাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। আর অস্ত্র আইনের মামলায় মেজর রঞ্জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে প্রদীপ মারাককে খালাস দিয়েছেন।
তবে যাবজ্জীবন কারাবাস থেকে হাজতবাসের সময়কাল বাদ দিয়ে কারাভোগ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় উভয় আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। তবে তাদেরকে নির্বিকার দেখা গেছে।
২০১১ সালের ১৭ জুলাই ভোরে ভৈরব উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে মেজর রঞ্জন ও তার সহযোগী প্রদীপ মারাককে গ্রেফতার করে র্যাবের ভৈরব ক্যাম্পের একটি দল। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ২টি পিস্তল, ৪ রাউন্ড গুলি, ৪টি বোমা, বোমা তৈরির উপকরণসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব ভৈরব ক্যাম্পের তৎকালীণ ডিএডি মো. করিমুল্লাহ বাদী হয়ে ভৈরব থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে, অস্ত্র আইনে এবং বিস্ফোরক আইনে তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। বুধবার সন্ত্রাস বিরোধী ও অস্ত্র আইনের দু’টি মামলায় রায় হয়েছে। এ দু’টি মামলায় মোট ২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছিল।
উলফা নেতা মেজর রঞ্জন চৌধুরী উরফে প্রদীপ রায় আসামের ধুবড়ি জেলার গৌরিপুর থানার মধু শোলমারি গ্রামের মৃত মধুসুধন রায়ের ছেলে। তিনি বাংলাদেশের শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার গজনির বাসিন্দা মনিন্দ্র হাগিদের মেয়ে সাবিত্রী ভ্রমকে বিয়ে করে গোপনে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। আর ঝিনাইগাতির বাকাকুড়া গ্রামের আরত সাংমার ছেলে প্রদীপ মারাক তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন। সরকার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান।