দিনাজপুর থেকে রতন সিং: দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তে মঙ্গলবার বিকেলে চোরাকারবারীদের পণ্য পাচারে বাধা দেওয়ার ঘটনায় বিজিবির উপর চোরাচালানীদের সশস্ত্র হামলার জবাব দিতে গিয়ে বিজিবি’র গুলিতে নিহত ১ ভারতীয় চোরাকারবারীর লাশ বৃহস্পতিবার বিএসএফ’র নিকট হস্তান্তর করা হবে। সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তের মেইন পিলার ২৮৪ সাব পিলার ৩৭/৩৮ এর নিকটবর্তী খেলার মাঠে ভারতীয় চোরাকারবারীরা বিজিবি’র হিলি সিপি’র টহল সদস্যদের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে জয়পুরহাটগামী একটি মালবাহী ট্রেনে অবৈধ পণ্য উঠানোর চেষ্টা করলে বিজিবি সদস্যরা চোরাকারবারীদের বাধা দেয়। চোরাকারবারীরা এক পর্যায়ে বিজিবি সদস্যদের উপর ১ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করলে হিলি সিপি’র বিজিবি সদস্য রাসেল (২১) আহত হন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবি গুলি বর্ষণ করলে ঘটনাস্থলে ভারতীয় চোরাকারবারী বিটন রায় (৩২) নিহত হন। সে ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রামের বৈদ্যনাথ রায়ের ছেলে। নিহত বিটনের লাশ বিজিবি সদস্যরা হিলি ক্যাম্পে নিয়ে আসে। বুধবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভারতীয় চোরাকারবারী নিহত হওয়ার ঘটনার সংবাদ পেয়ে ভারতীয় ৯৬ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ সদস্যরা সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়। এতে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ও উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সীমান্তে ভারতীয় চোরাকারবারী নিহত হওয়ার পরে দু’পক্ষই মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং প্রায় ১৫/২০ রাউন্ড গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় একজন নিহত ছাড়াও আরও ২ জন আহত হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান। প্রতিনিয়তই ঘটনাস্থলে চোরাকারবারীদের দ্বারা বিজিবি সদস্যরা আক্রমণের শিকার হন। কয়েকদিন আগেও সেখানে বিজিবি চোরাকারবারীদেরকে ধরতে গেলে চোরাকারবারীরা ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে।
হিলি বিজিবি বিওপি ক্যাম্পের কমান্ডার রেজাউল করিম একজন নিহত হওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, আত্মরক্ষার্থে বিজিবি সদস্যরা গুলিবর্ষণ করেছে। পরে বিএসএফ’র সদস্যরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি করলে পাল্টা জবাবে বিজিবি সদস্যরা কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় হিলিতে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জয়পুরহাট-৩ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল আব্দুর রাজ্জাক তরফদার, সহ-অধিনায়ক মেজর নাসির ইমাম রুমি, ভারতের মালদা সেক্টরের ডিআইজি যশোবন্দ সিং, বিএসএফ ৯৬ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক রাজেন সুডসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যরা অংশ নেন।