শেরপুরে কঠোর নিরাপত্তায় আলবদর নেতার দাফন সম্পন্ন

শেরপুর থেকে হাকিম বাবুল: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলবদর কমান্ডার জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরের পর রবিবার (১২ এপ্রিল) ভোর ৫ টায় শেরপুরে লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সড়কপথে ময়মনসিংহ হয়ে কামারজ্জামানের লাশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরপত্তার মধ্য দিয়ে শেরপুর আনা হয়।

Sherpur Pic-2
বাজিতখিলা-কুমড়ি এতিমখানা মাঠে নামাজে জানাযা শেষে লাশ দাফন করা হয়

 

ভোর সাড়ে ৪ টায় তার লাশ নিজ গ্রামের বাড়ি শেরপুরের বাজিতখিলা এলাকায় পৌঁছায়। রাত চারটা ৪০ মিনিটে কামারুজ্জামানের মরদেহ পরিবার পরিজনের কাছে হাস্তান্তর করা হয়। তার বড় ভাই কফিলউদ্দিন শেরপুর সদর ইউএনও হাবিবুর রহমান হাবিবের নিকট থেকে মরদেহ গ্রহণ করেন। পরে ভোর চারটা ৫০ মিনিটে মুদিপাড়া এলাকার বাজিতখিলা-কুমড়ি এতিমখানা মাঠে নামাজে জানাযা শেষে ভোর পাঁচটায় বাজিতখিলা-গাজীর খামার সড়ক সংলগ্ন ওই এতিমখানার পশ্চিম পাশে তার লাশ দাফন করা হয়। লাশের জানাযা ও দাফনের সময় কামরুজ্জামানের আত্মীয়-পরিজন ও এতিমখানার শিশুরা ছাড়া অন্য কাউকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে থাকতে দেয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আইনশৃংখলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সাংবাদিক এবং কামারুজ্জামানের আত্মীয়-স্বজনসহ মোট ১৪ টি গাড়ির বহর ঢাকা থেকে শেরপুর জেলা শহর হয়ে বাজিতখিলা বাজার মোড়ে পৌঁছে। পরে সেখানে মিডিয়াকর্মীদের থামিয়ে দিয়ে বাজিতখিলা-গাজীর খামার সড়ক ধরে লাশের গাড়ি চলে যায় ওই মোড় থেকে এক কিলোমিটার দুরে মুদিপাড়া গ্রামের বাজিতখিলা-কুমড়ি এতিমখানার সামনে। এসময় কোনও মিডিয়াকর্মী ও সাধারণ মানুষ কাউকেই ওই গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

তবে কামারুজ্জামানের ভাই কফিল উদ্দিন জানান, রবিবার ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে এতিমখানা প্রাঙ্গণে ফজরের আযানের আগেই জানাযা ও দাফন শেষ করা হয়। কেবলমাত্র তাদের আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে জানাযার নামাজে জানাজা পড়ানো হয়। জানাজার নামাজ পড়ান কামারুজ্জামানের ভাগ্নী জামাই এবং বাজিতখিলা কুমড়ি দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার (অধ্যক্ষ) মাওলানা মো. আব্দুল হামিদ। জানাজায় তিন কাতারে প্রায় ৫০ জন লোক উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি জানান। এরপর এতিমখানার সামনে পূর্ব নির্ধারিত স্থানে কামারুজ্জামানের লাশ দাফন করা হয়।

এদিকে, লাশ দাফনের পর সকাল থেকেই এলাকার লোকজন কামারুজ্জামানের কবর দেখার জন্য ওই এতিমখানার সামনে জড়ো হতে থাকে। কিন্তু পুলিশ-র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে কবরের কাছে যেতে তারা সাহস করেনি। রাত থেকেই বাজিতখিলা এবং মুদিপাড়া গ্রামে আইনশংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল চলছে। অপরদিকে, কামারজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ায় রবিবার সকাল ১০ টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে শহরে আনন্দ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এস.এম. নূরুল ইসলাম হিরু।