বৈশাখী মেলা উপলক্ষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎ শিল্পীরা

গোপালগঞ্জ থেকে হায়দার হোসেন: দুয়ারে কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। আর এ উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হবে বৈশাখী মেলা। তাই মেলায় বিক্রি করতে মাটির খেলনাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার বাজুনিয়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের মৃৎ শিল্পীরা।

Gopalganj Boishakhi Photo-01 (11.04.2015)
মাটির খেলনাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৃৎ শিল্পীরা

তবে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র দখল করে নেওয়ায় বাজার হারাচ্ছে এ শিল্পটি। ফলে অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন এ পেশা। সরকারি সাহায্য সহযোগিতে পেলে এ পেশাটিকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সদর উপজেলার বাজুনিয়া ও কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম ঘুড়ে দেখা গেছে, বাড়ির আঙ্গিনায় বসে চাকা ঘুরিয়ে মাটি দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সকলেই মিলে তৈরি করেছে আম, কাঁঠাল, ঘোড়া, হাতিসহ বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী ও অন্যান্য জিনিসপত্র।

মা-বাবাকে সাহায্য করতে স্কুল পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা স্কুল ছুটির পর তৈরি করছে মাটির তৈরি জিনিসপত্র। এসব জিনিসপত্র তৈরির পর এগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে করা হয় শক্ত। পরে রং তুলির আঁচড়ে হাতের ছোঁয়ায় দেওয়া হচ্ছে শৈল্পীক রূপ। সব কাজ শেষে এগুলো ঝাঁকা ভরে নেওয়া হবে বিভিন্ন বৈশাখী মেলায়। মেলাগুলোতে আনেকটা এলাকা জুড়ে সাজানো হবে মাটির তৈরি খেলনাগুলো। যা ছোট-বড় সব বয়সের মানুষকেই আকৃষ্ট করবে সমানভাবে। বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রিও হবে ভালো।

বাজুনিয়া গ্রামের পঞ্চানন পাল ও রতন পাল বলেন, প্লাস্টিকের পণ্য বাজার দখল করে নেওয়ায় মাটির তৈরির জিনিসপত্রের কদর একদম নেই। আর এখন কেউ মাটির তৈরি জিনিসপত্র কিনতে চান না। ফলে আস্তে আস্তে বাজার হারাচ্ছে এ শিল্পটি।

এছাড়া দাম না পাওয়ায় অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। আর যারাও রয়েছে তারা তাদের পৈতৃক এ পেশাটিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। বাংলার চিরচারিত এ শিল্পটি যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) কর্মকর্তারা জানালেন, প্লাস্টিকের বাজার দখল করায় মাটির জিনসপত্র বিক্রি না হওয়ায় তারা আগ্রহ হারাচ্ছে। মৃৎ শিল্পীদের সরকারি ও বেসরকারিভাবে সাহায্য-সহাযোগিতা করা গেলে তা আবার আগের জায়গায় ফিরে আসতে পারবে।