শরণখোলায় এইচএসসি পরীক্ষায় নকলের মহোৎসব, কেন্দ্র সচিবের পদত্যাগ

বাগেরহাট থেকে বাবুল সরদার: চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় বাগেরহাটের শরণখোলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে নকলের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অনৈতিক এ কাজের প্রতিবাদ করতে না পেরে কেন্দ্র সচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ওই কলেজের যুক্তিবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ইংরেজী ১ম পত্রের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে নকল করার পাশাপাশি কয়েকজন শিক্ষকের মাধ্যমে বিভিন্ন কক্ষে নকল পৌঁছে দেওয়ার দৃশ্য দেখে তিনি তাৎক্ষণিক শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে কলেজ অধ্যক্ষের নিকট কেন্দ্র সচিবের পদ থেকে পদত্যাগের লিখিত আবেদন করেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার শিক্ষকমহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কলেজ ও শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে, ১ এপ্রিল থেকে সারা দেশের ন্যায় উপজেলা মাতৃভাষা কলেজ,  তাফালবাড়ী স্কুল এ্যান্ড কলেজ ও শরণখোলা ডিগ্রী কলেজের জেনারেল ও কারিগরি বোর্ড শাখার ৮১৬ জন শিক্ষার্থী শরণখোলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রথম দিন থেকে টুকিটাকি নকল শুরু হয়। কিন্তু ৯ এপ্রিল ইংরেজী ১ম পত্র পরীক্ষার দিন ইংরেজী বিভাগের মাতৃভাষা কলেজের প্রভাষক আবুল খায়ের ও শরণখোলা ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক আলতাফ হোসেনের সহোযোগিতায় ওই কলেজের কারিগরি শাখার শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম ইংরেজী ১ম পত্রের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর টাকার বিনিময়ে কক্ষে কক্ষে শিক্ষার্থীদের নিকট পৌঁছে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনো কোনো শিক্ষক আবার মূল বই কক্ষে পৌঁছে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নকলের এমন ভয়াবহতা দেখে শিক্ষকদের অনেকেই প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। বিষয়টি কেন্দ্র সচিবের নজরে আসলে তিনি পদত্যাগ করেন। এ বিষয় নাম প্রকাশ না করা শর্তে কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক বলেন, নকলের এমন ভয়াবহ চিত্র কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি দেখেননি। তবে বিষয়টি কলেজের এক স্টাফ স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষায় পাশের হার বাড়াতে শিক্ষার্থীদের সামান্য সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় যাতে লেখালেখি না হয় সেজন্যও তিনি অনুরোধ করেন।

এ বিষয় কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব তার ভালো লাগেনা বলে তিনি সড়ে গেছেন। এ ব্যাপারে শরণখোলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল আলম ফকির মুঠোফোনে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

অপরদিকে, নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ অতুল মন্ডলের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টাকরে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।