কুলাউড়ায় মরাগুগালী নদীর প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ

মৌলভীবাজার থেকে আজিজুল ইসলাম: কয়েকটি পাহাড়ি ছড়া থেকে নদীটির উৎপত্তি হওয়ায় নদীটির নাম হয় গুগালীছড়া। সময়ের বিবর্তনে গুগালিছড়া মরে গিয়ে নাম হয় মরাগুগালি। সেই মরাগুগালির প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Sora
খননের মাধ্যমে মরাগুগালির প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ

কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা, জয়চন্ডী ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়ার সমন্বয়ে উৎপত্তি হয় গুগালীছড়া নদীর। ৩টি ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে নদীটি গিয়ে মিলেছে এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে। সারাবছর প্রবাহিত হতো গুগালীছড়া নদীটি। নদীর তীরে হাজার হাজার একর জমিতে শীত (শুষ্ক) মৌসুমে মানুষ বোরো আবাদ করতো। কিন্তু পাহাড়ি ঝর্ণাধারায় চা বাগান কর্তৃপক্ষ পানির অবাধ প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। শুষ্ক মৌসুমে পাহাড়ি ছড়ায় বাঁধ দিয়ে চা গাছে পাম্প দিয়ে পানি দেওয়া হয়। ছড়া শাসনের ফলে গুগালীছড়া পরিণত হয় মরাগুগালিতে।

মরাগুগালী তীরের ৮টি গ্রামের সহস্রাধিক কৃষক পরিবারের দীর্ঘদিনের দাবি এই মরাগুগালী নদী পুন:খননের। দীর্ঘদিন ধরে নদীটি খনন না করায় খরায় পুড়ে যায় বোরো ধান। আবার সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় কৃষকের হাঁড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের ফসল। এই নদীর পানি ব্যবহার করে হাকালুকি হাওরের ধলিয়া বিল ও বিশেষ করে জয়চন্ডী ইউনিয়নের মানুষ বোরো আবাদ করে থাকে। চলতি বছর ১১ মার্চ স্থানীয় এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানের সুপারিশসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন এলাকাবাসী।

মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে জয়চন্ডী ইউনিয়নেরই সন্তান জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন। উদ্যোগ নেন মরাগুগালী নদীর প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়ার। মাটি কাটার মাধ্যমে ১৩ এপ্রিল সোমবার গুগালীছড়া খনন কাজের শুভ উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসম কামরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, পৌর মেয়র কামাল উদ্দিন আহমদ জুনেদ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা ফজলুল হক খান শাহেদ, পৌর প্যানেল মেয়র জয়নাল আবেদিন বাচ্চু, কাউন্সিলর শামিম আহমদ চৌধুরী, লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আতাউর রহমান চন্দন প্রমুখ। বর্তমানে ছড়াটির খননের কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে বইছে আনন্দের বন্যা।

জাতীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন জানান, বর্তমানে ৪ কিলোমিটার নদীটির খনন কাজ হবে। তবে সুযোগ হলে নদীটি ৬ কিলোমিটার খনন করার পরিকল্পনা রয়েছে। অধিক বৃষ্টি বা আগাম বন্যা যদি না হয়, তবে ১ মাসের মধ্যে খনন কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।