মধুপুর (টাঙ্গাইল) থেকে আব্দুল্লাহ আবু এহসান: ধনবাড়ী উপজেলার বলিয়াবাড়ী গ্রামের শিশু বায়েজীদকে নির্যাতন ও প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ সোমবার কথিত জীনের বাদশা সবুজ পরীসহ দু’জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। গ্রেফতারকৃত জীনের বাদশা সবুজ পরী টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার চরভাতকুড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে এবং তার সহযোগী শামিম একই উপজেলার বলিয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে। ১২ এপ্রিল দেশের খবরে প্রতারক জীনের বাদশা সবুজ পরীর উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি গোলাম মোস্তাফা জানান, ভিক্টিম বায়েজীদ ধনবাড়ী উপজেলার বলিয়াবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এবং টাঙ্গাইল পৌরসভার চতুর্থ শে্িরণর কর্মচারি আব্দুল হাইয়ের দ্বিতীয় পক্ষের পুত্র। একই উপজেলার চরভাতকুড়া গ্রামের কথিত জীনের বাদশা সবুজ পরীর সাথে বায়েজীদের সৎ ভাই এবং টাঙ্গাইল টেক্সটাইল কলেজের সাবেক ছাত্র শামীমের পূর্ব পরিচয় ছিল। প্রতারক সবুজ অলৌকিকভাবে ৫ কোটি টাকা পাইয়ে দেওয়া এবং একজন মহিলা জীনের সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শামীমের সাথে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলে। কাঙ্খিত টাকা ও মহিলা জীনকে পাওয়ার লোভে এক পর্যায়ে শুরু হয় শিশু বায়েজীদের উপর নির্মম নির্যাতন। নির্যাতনে পুত্রের জীবন সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে মা শাহীদা বেগম কৌশলে টাঙ্গাইল শহরের বাসা থেকে বায়েজীদকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
বায়েজীদের মা শাহীদা বেগম রবিবার রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় প্রতারক সবুজ ও সৎ ছেলে শামীমসহ জীনের বাদশা দলের ১১ প্রতারককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ টাঙ্গাইল শহরের মেইন রোড থেকে ঐ দু’জনকে গ্রেফতার করে সোমবার আদালতে চালান দিলে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বায়েজীদের মা শাহীদা বেগম অভিযোগ করেন সৎপুত্র শামীম সম্পত্তির লোভে বায়েজীদকে হত্যার জন্যই কথিত জীনের বাদশা সবুজ পরীকে ভাড়া করে এনেছিল।
স্থানীয় সাংবাদিকরা রবিবার সবুজ পরীর ঠিকানা ধনবাড়ী উপজেলার চরভাতকুড়া গ্রামে সরেজমিন খোঁজ নিতে গেলে এলাকাবাসীরা জানান, সবুজ একটি প্রতারক দলের নেতা। ধনবাড়ী ও মধুপুর উপজেলা জুড়ে তার শতাধিক শিষ্য রয়েছে। বিগত দেড় বছরে ধনবাড়ী থানা পুলিশ তার দলের তিনজনকে এবং মধুপুর থানা পুলিশ চারজনকে আটক করে চালান দেয়। এ সংঘবদ্ধ চক্রটি মোবাইল ফোনে সহজ সরল মানুষকে কোটি টাকার লটারি অথবা কালি সাধনের মাধ্যমে অগাধ ধন সম্পদ পাওয়ার লোভ দেখিয়ে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।